• Sat. Jun 7th, 2025

দৈনিক পাবনার আলো, মাহফুজ আলী কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত

#pabnaralo#, pabna# pabnanews# পাবনারআলো# পাবনার_আলো#পাবনারখবর#পাবনারবার্তা

নিউজ আপডেট

দেশ-বিদেশের ব্রেকিং নিউজ

বিমানবন্দর থেকে পাবনার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিদ গ্রেফতার!

  • Home
  • বিমানবন্দর থেকে পাবনার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিদ গ্রেফতার!

পাবনা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল হাসান শাহীনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম।

আটক সোহেল হাসান শাহীন পাবনা পৌর এলাকার বালিয়াহালট এলাকার বাসিন্দা। তিনি পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

ওসি আব্দুস সালাম জানান, শাহীন ৪ আগস্টের পর থেকে পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। যদিও মামলার এজাহারে তার নাম ছিল না, তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে আসামি করা হয়।

জানা গেছে, সিঙ্গাপুর থেকে মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সোহেল হাসান। সন্ধ্যায় ঢাকায় অবতরণের পর ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করে।

পাবনা সদর থানা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার (৪ জুন) পাবনায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি নিয়েছে।

গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পাবনা শহরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় জাহিদ ও নিলয় নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের হয়। সাবেক চেয়ারম্যান আবু সাইদ খানসহ আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে তদন্তে সোহেল হাসান শাহীনকেও ওই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পলাশ হোসেন, পাবনা :
ঈশ্বরদী পৌরসভার সচিব জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক পলাশ হোসেন কে মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় বকাবকি হত্যার হুমকি মাধ্যমে হত্যার হুমকি দিয়েছেন ঈশ্বরদী পৌরসভার সচিব জহুরুল ইসলাম ।

এ ব্যাপারে সোমবার (০২ জুন ) সাংবাদিক পলাশ হোসেন হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পাবনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি নম্বর- ১৬১

জানা যায়, গত রবিবার দৈনিক ভোরের কাগজ অনলাইনে ‌‘দুদকের অভিযানে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে
ঈশ্বরদী পৌরসভার সচিব জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে ওই দিন বিকেলে জহুরুল ইসলামের ব্যক্তিগত নম্বর থেকে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে হত্যার হুমকি দিয়ে ফোন রেখে দেয়।

এ ঘটনায় তিনি পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে অবগত করে সোমবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পাবনা সদর থানায় একটি জিডি করেন।

সাংবাদিক পলাশ হোসেন জানান , সংবাদ দৈনিক ভোরের কাগজে প্রকাশের পর ১ জুন বিকেলে মুঠো ফোনে কল দিয়ে অকথ্য ভাষায় বকাবকি ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ।

তিনি আরো জানান হুমকির প্রমাণ হিসেবে তার কাছে একাধিক ডকুমেন্ট রয়েছে। তিনি জীবনের নিরাপত্তার জন্য পাবনা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম জানান , পলাশ হোসেন একটি জিডি করেছেন। ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পদ্মা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন এক বৃদ্ধ কৃষক। হাত তুলে দেখাচ্ছেন কোথায় ছিল তাঁর স্বপ্নের জমি, যেখানে তিনি প্রতিবছর বাদাম, সরিষা আর ধান চাষ করতেন। আজ সেই জমি নেই—নেই তার রংবে রঙের ফসল, নেই জীবিকার অবলম্বন। সবকিছুই গিলে ফেলেছে নদী, আর নদীর পেছনে রয়েছে এক নির্মম, অব্যবস্থাপনার গল্প—অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন।

পাবনার সদর, ঈশ্বরদী ও সুজানগর উপজেলায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙন। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শতাধিক ট্রলার এবং ভ্রাম্যমাণ ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। প্রশাসনের চোখের সামনে দিনের পর দিন চলা এই অপতৎপরতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চরাঞ্চলের শত শত বিঘা ফসলি জমি, নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।

ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের নদী রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে। লালনশাহ সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচের বিনোদন কেন্দ্র, বাজার, দোকানপাট—সবই পড়েছে বিপদের মধ্যে। সুজানগরের সাতবাড়ীয়া, রায়পুর, উদয়পুর ও নাজিরগঞ্জেও একর পর এক ফসলি জমি হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময়ের শুষ্ক মৌসুমের কৃষি এখন শুধুই স্মৃতি।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, “আমরা অনেকবার প্রশাসনের কাছে গেছি, কিন্তু কার্যকর কিছু পাইনি। বরং উল্টো হুমকি খাই। আমাদের কণ্ঠ যেন কেউ শুনছে না।”

পাবনা জেলা পুলিশ সুপার আলী মুর্তজা খান এই বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাংবাদিকদের দোষারোপ করেছেন। তার বক্তব্য, “কিছু সাংবাদিক বালু মহল থেকে টাকা না পেলে আমাদের কাছে আছে বালু মহলের তথ্য সংগ্রহের জন্য। এ সময় তিনি আরো বলেন এটা নৌউ পুলিশের কাজ। আর জেলা প্রশাসন যখন অভিযানে পুলিশ চায় আমি তখন দিয়ে দেই। এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই আপনাদের মত করে লিখে নিয়েন।

অপরদিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম স্বীকার করেছেন, “মোবাইল কোর্ট পরিচালনার আগেই খবর পৌঁছে যায় বালু দস্যুদের কাছে—এটা খুবই দুঃখজনক।” যখনই বালু মহল বিষয়ে কোন তথ্য পেয়েছি, তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে সেক্ষেত্রে আমার অফিসাররা কাদা মাটি উপেক্ষা করে সফলভাবে সেগুলো করতে সক্ষম হয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি বালু মহল সম্পর্কিত দস্যুদের তৎপরতা বন্ধে।

এই মুহূর্তে চর ভবানীপুর, দড়ি ভাউডাঙ্গি, শুকচর, নগরবাড়ি, চাকলা, পাকশী ও লক্ষ্মীকুণ্ডার মতো অঞ্চলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। নদী হারাচ্ছে তার প্রাণ, কৃষক হারাচ্ছেন জীবিকা।

আজ এই জনপদের কৃষকরা আর শুধু নদীভাঙনের শিকার নন, তারা নিপীড়নের শিকার। তাদের স্বপ্ন ভাঙছে, জমি হারাচ্ছে, অথচ অপরাধীরা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের একটাই দাবি ফসলি জমি বাঁচান, পরিবেশ রক্ষা করুন, নদীটাকে বাঁচতে দিন


অনন্য সমাজ কল্যাণ সংস্থার চাকুরীচ্যুত প্রাক্তন ফিল্ড অফিসার তুরানী সুলতানা, স্বামী : খন্দকার আলতাফ হোসেন, পিতা ঃ মৃত তোফাজ্জল হোসেন, সাং-রাধানগর পাওয়ার হাউসপাড়া, থানা ও জেলা-পাবনা অনন্য সমাজ কল্যাণ সংস্থার পাবনা আরবান শাখায় দায়িত্বকালীন সময়ে ২৪ জন সদস্যর নিকট হতে = ৬,১৪,০৮৪/- টাকা উত্তোলন করিয়া অফিসে জমা প্রদান না করিয়া ভুয়াভাবে অফিসে নথিপত্রে জমা দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। এতদ্ব বিষয়ে অনন্য সমাজ কল্যাণ সংস্থার পক্ষে বিজ্ঞ আইনজীবি গত ২৬/০৮/২০২১ তারিখে তুরানী সুলাতানা ও তার জামিনদার খন্দকার আলতাফ হোসেনকে সংস্থা কর্তৃক মৌখিকভাবে সমিতির হিসাব নিকাশ বুঝাইয়া দিবার এবং উল্লেখিত আত্নসাৎকৃত চুরির টাকা ফেরত দিয়া যাইবার অনুরোধ করিলে তুরানী সুলতানা ২০/১১/২০২১ ইং তারিখ বিকাল অনুমান ৪.০০

ঘটিকায় অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থার আরবান শাখায় উপস্থিত হয়ে উক্ত অর্থের সঠিক হিসাব নিকাশ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়, এবং তুরানী সুলতানা যে সকল সমিতি থেকে টাকা আত্নসাৎ করেছেন সে সকল সমিতির সদস্যগন স্বাক্ষ প্রমান উপস্থাপনা করেন যে তুরানী সুলতানা তাদের টাকা আত্নসাৎ করেছেন। এছাড়াও তুরানী সুলতানা অর্থ আত্বস্বাতয়ের দায়ে চাকুরীচ্যুত এবং চার্জসীটভুক্ত মামলার আসামী সাবেক নির্বাহী পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী, সাবেক উপ-পরিচালক মোঃ মতিউর রহমান ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ টিপু বিশ্বাস এদের সাথে যোগসাজশে অনন্য সমাজ কল্যাণ সংস্থার নামে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রচারনা করেন। পরবর্তিতে অনন্য সমাজ কল্যন সংস্থার আরবান শাখার ম্যানেজার হরিপদ সরকার ১৫/‘১২/২০২১ ইং তারিখে বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত নং-০১, পাবনায় মামলা দায়ের করা হয় । পিটিশন মামলা নং-২৭৫/২০২১ (পাবনা), তারিখ-১৫/১২/২০২১ খ্রিঃ। আমলী আদালত নং-০১ অনুসন্ধানের জন্য পুলিশ সুপার, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), পাবনাকে নির্দেশ প্রদান। পিবিআই তদন্তভার প্রদান করেন জনাব মোঃ ফজলে এলাহী, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, পাবনা। পিবিআই কর্মকর্তা আবু রায়হান এই তদন্তভার গ্রহন করে তিনি অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থার কোনরকম সঠিক তদন্ত না করেই আদালতে সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনা করায় অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থার প্রতিনিধি উকিল সকল পেপারস অর্থ আত্বস্বাতের প্রমান আদালতে পেশ করে পিবিআই রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারাজি প্রদান করেন । আদালত সেই নারাজি সঠিক তদন্তের স্বার্থে পুনরায় অনুসন্ধানের জন্য সিআইডি পাবনা কার্যালয়কে তদন্তভার প্রদান করেন। সিআইডি সঠিক রিপোর্টের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত আসামী তুরানী সুলতানা ও তার জামিনদার আসামী খন্দকার আলতাফ হোসেনকে গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করনে । বিগত ১৭.০৫.২০২৫ ইং তারিখ পাবনা সদর থানা কর্তৃক তুরানী সুলতানা এবং তার চাকুরিকালীন জামিনদার তার স্বামী খন্দকার আলতাফ হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করেন । পরিশেষে আইনের প্রতি শ্রদ্ধারেখে বলা যায় যে, প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্নসাৎ করে আইনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন সুযোগ নেই । এক্ষেত্রে আইনের প্রতি দৃড় বিশ্বাস রেখে পরবর্তীতে কেউ যেন প্রতিষ্ঠানের টাকা অন্যায় ভাবে অর্থ আত্মসাতের মত ঘৃনিত অপরাধ না করে সেই বিষয়ে সর্তক করা হল।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, জামায়াতে ইসলাম দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায়। কিন্তু এই পরিবেশ বিঘ্নিত করতে কেউ কেউ চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ মনে করছেন আ.লীগ চলে গেছে উনারা দেশের মালিক হয়ে গেছে। এজন্য সবাইকে মনে রাখতে হবে হাসিনার মতো মানুষকে এই দেশের মানুষ বিদায় করেছেন। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই- আমাদেরকে কেউ চক্ষু রাঙিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবেন না, আমরা কারো চক্ষু রাঙানিকে পরোয়া করি না।

শনিবার (১৭ মে) দুপুরে সুজানগর উপজেলা ও বেড়া জামায়াতের আয়োজিত অনুষ্ঠান সুজানগর অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার ও পৌর হাট মাঠের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, আমাদের দুই মন্ত্রীর এক টাকাও দুর্নীতি পায়নি। আমাদের ইতিহাস সৎ নেতাকর্মী তৈরির। নির্দোষ এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি, দলের নিবন্ধন ও প্রতিক ফিরিয়ে দিতে হবে। আগে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। এরপর জাতীয় নির্বাচন হবে। কোন সরকারের অধিনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। আমরা সুখী সমৃদ্ধশালী আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে  দুর্নীতিমুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছি।

এ জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। শহীদ আমীরে জামায়াত মতিউর রহমান নিজামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রথম শ্রেণির সব নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদিকেও কারাগারে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি  বলেন, আ.লীগের সব নেতাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এদের কোন ক্ষমা করা চলবে না। এরা অসংখ্য মানুষকে বছরের পর বছর আয়নাঘরে গুম করে রেখেছিল। দেশের শাসন ব্যবস্থা নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বললেই গুমের শিকার হতে হতো। এখনো অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিগত পতিত সরকার ভারতীয় দালাল ঘসেটি বেগম হাসিনা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে।  হাসিনার আমলের ভূয়া নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বিচারপতি খাইরুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে হবে। সব হত্যাকান্ডের দায় তাকে নিতে হবে। 

উত্তরবঙ্গের বর্ষিয়ান এ নেতা সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, জুলাই বিপ্লবে নিহতের পরিবারের একজন করে যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকুরী দিতে হবে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত এদের বিচার দ্রুত করতে হবে।শুধু শেখ হাসিনাকে বিচার করলে হবে না, একসঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে বিচার করতে হবে। বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনতে হবে।

সুজানগর  উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর, পাবনা-২ (সুজানগর ও বেড়ার আংশিক) আসনের এমপি পদপ্রার্থী জননেতা অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, পাবনা জেলা জামায়াতে নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন, জামায়াতের ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যরিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা- ৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আলী আসগর, পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার খান,  সহকারী সেক্রেটারি আবু সালেহ মো: আব্দুল্লাহ, এসএম সোহেল ,পাবনা সদর জামায়াতের আমীর আব্দুর রব, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পাবনার সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার সভাপতি ফিরোজ হোসাইন,  জেলা শাখার সভাপতি ইসরাইল হোসাইন শান্ত। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য শেষে পাবনার ৫টি আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন রফিকুল ইসলাম খান। পরে তাদের নিয়ে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অনুষ্ঠানস্থল থেকে়ে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলার সামনে গিয়ে শেষ হয়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, বেড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আতাউর রহমান সরকার ও সুজানগর জামায়াতের সেক্রেটারি টুটুল হোসাইন বিশ্বাস।

পাবনা প্রতিনিধি

প্রেমের টানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পাবনায় চলে আসলো ১৩ বছরের এক তরুণী। গত ১২ মে সাদিয়া আক্তার নামের ওই তরুণী পাবনার সুজানগর উপজেলার সাদুল্লাহপুর এলাকায় প্রেমিক রাব্বির বাসায় চলে আসে। পালিয়ে আসা ঐ তরুণী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের নাটঘর এলাকার মুর্শিদ মিয়ার মেয়ে। প্রেমিক রাব্বি হোসেন রুবেল পাবনা সুজানগর উপজেলার সাদুল্লাপুর গ্রামের মো: আইনুল শেখের ছেলে।

জানা যায়, টিকটকের মাধ্যমে রাব্বি হোসেন রুবেলের সাথে পরিচয় হয় সাদিয়া আক্তারের। এক সময় গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এভাবে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর গত ১২ মে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে পাবনায় পালিয়ে আসে সাদিয়া আক্তার। পরদিন ১৩ মে রাব্বির সাথে বিয়ে হয় তার। মেয়ে পালানোর খবর পেয়ে ১৪ তারিখ পাবনায় আসে সাদিয়া আক্তারের বাড়ির লোকজন। এ সময় উৎসুক জনতা পালিয়ে আসা তরুণীকে দেখতে ভিড় জমায় রাব্বির বাড়িতে। মীমাংসার একপর্যায়ে পালিয়ে যায় প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল, শুরু হয় উত্তেজনা। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উদ্ধারকৃত সাদিয়া আক্তারকে দুবলিয়া পুলিশ ফাঁড়ি তার পরিবারের হাতে তুলে দেন।

সাদিয়া ও রাব্বির বিয়ের বিষয়ে কাজী মো: আবু হানিফাহ্ জানান, তারা যে কাবিননামা দেখাচ্ছে সেটা একটি ভুয়া কাবিননামা।

এ বিষয়ে দুবলিয়া ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ শহিদুল্লাহ জানান, পালিয়ে আসা সাদিয়া আক্তার ও রাব্বি হোসেন রুবেল দুজনেই অপ্রাপ্তবয়স্ক। সাদিয়া আক্তারকে উদ্ধার করে তার অভিভাবকের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তারা কোন আইনি পদক্ষেপ নেয়নি।

নাটোর প্রতিনিধি আশাঃ

নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার গৌরীপুর নূরানী এতিমখানা ও মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিচালনা কমিটি কাগজে-কলমে ভুয়া এতিম দেখিয়ে সরকারি অনুদান হাতিয়ে নিচ্ছে এবং সেই অর্থ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যয় করছে।

ভুয়া এতিম দেখিয়ে অনুদান আত্মসাৎ

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রতিষ্ঠানে যে সংখ্যক এতিম দেখানো হচ্ছে, বাস্তবে সেখানে তার অর্ধেকেরও কম শিশু রয়েছে। তথাপি, নথিপত্রে অতিরিক্ত এতিম দেখিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও অন্যান্য উৎস থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। এই অর্থের সিংহভাগই এতিমদের জন্য ব্যয় না হয়ে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের ব্যক্তিগত খাতে চলে যাচ্ছে।

জনবল নিয়োগে স্বজনপ্রীতি

এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ। জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও বাবুর্চিসহ বিভিন্ন পদে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের আত্মীয়স্বজনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের অনেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন বা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন না। এতে করে শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিশুদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

তদন্তের অভাব ও প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা

যদিও সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে অনলাইনে অভিযোগ জানানোর সুবিধা রয়েছে, তবে এসব অভিযোগ তদন্তে স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ। দীর্ঘদিন ধরে চলমান অনিয়মের পরও যথাযথ তদন্ত বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নজির খুব কমই দেখা গেছে, ফলে দুর্নীতির চক্র অটুট রয়ে গেছে।

ভুয়া সাংবাদিক গ্রেফতার

এদিকে, নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ারুজ্জামান জানিয়েছেন, এতিমখানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে চারজন ভুয়া সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসীর দাবি

স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এতিম শিশুদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। প্রতিষ্ঠানটি যেন সঠিকভাবে পরিচালিত হয় এবং এতিমদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

মোঃ সিয়াম

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মিনারেল ওয়াটারের নামে চলছে জেনারেল প্রতারণা। জীবানুযুক্ত পানি নিয়ে “বিশুদ্ধতার ফোঁটা” শ্লোগান দিয়ে নামে-বেনামে স্টিকার লাগিয়ে সদর্পে বাজারজাত করে আসছে ভুয়া কোম্পানীরগুলো।

নামে- বেনামে বিভিন্ন কোম্পানীর মিনারেল ওয়াটারের লেবেল লাগানো প্লাস্টিক জার থেকে সরবরাহকৃত এসব পানি আসলে মিনারেল ওয়াটার নয়, বরং জেনারেল পানি। কর্তৃপক্ষ জীবানুযুক্ত পানি নিয়ে বিশুদ্ধতার ফোঁটা শ্লোগান দিয়ে নামে বেনামে স্টিকার লাগিয়ে সরবরাহ করে আসছে। রির্ভাস অসমোসিস পদ্ধতির মাধ্যমে পরিশোধিত ও আল্ট্রাভায়োলেটেড’র মাধ্যমে জীবানুমুক্ত এবং ওজোন টেকনোলজির মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধ করার কথা বলা হয়। হরেক রকমের স্টিকার লাগিয়ে রাশিয়ান নাগরিকদের খায়ানো হচ্ছে।

এভাবেই পদ্মা নামক একটি কোম্পানি অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে জীবানুযুক্ত পানি বোতলজাত করে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প রাশিয়ানদের এই পানি সরবরাহ করে আসছে,তাদের নেই কোন পরিবেশে ছাড়পত্র।

এ ব্যাপারে কোম্পানির মালিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিকদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির ভয়-ভীতি দেখায়, স্থানীয় বিএনপি নেতা তাদেরকে বলছে যে সাংবাদিক আসলে বেঁধে রাখো। তাই কোন গণমাধ্যম কর্মী গেলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয়।
এভাবে চালিয়ে যাচ্ছে পদ্মা মিনারেল ওয়াটার নামের কোম্পানির অসাধু ব্যবসা।

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে পাবনা সদর উপজেলায় বাবুল শেখ ওরফে লগা ( ৪০) নামের এক চরমপন্থী দলের নেতাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।

মঙ্গলবার ( ১৩ মে) ভোরে উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের কোলাদী বিজয়রামপুরের একটি বাগান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত লগা কোলাদী বিজয়রামপুরের হোসেন শেখের ছেলে। তিনি সর্বহারা দলের নেতা ছিলেন। এছাড়া একাধিক হত্যা, ডাকাতি মামলার আসামি ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি পাবনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যার মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ খানের বিশেষ ক্যাডার ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয়রামপুর এলাকার সেউলি বাজার থেকে মধ্যরাতে বাড়ি যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এরপর এলাকাবাসী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিজেদের দলীয় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও চুরির মালামালের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। রাতে পুর্ব পরিকল্পনামতো তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, চরমপন্থী দলের নেতা ছিল। তাকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পাবনার সদর উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কাটার অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের তিন মাসের জেল দেওয়া হয়। এ সময় আটটি ট্রাক ও চারটি স্কেভেটর মেশিন জব্দ করা হয়।

রোববার রাতে উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুরে অঞ্চলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

আটককৃতরা হলো- পাবনা সদরের কৃষ্টপু্র গ্রামের কালু প্রামাণিকের ছেলে জুয়েল, হেরাজ প্রামাণিকের ছেলে হৃদয়, চর চরভাঙ্গা বাড়িয়ার রাসেল বিশ্বাসের ছেলে মারুফ, বধেরহাটের সাদেক মন্ডলের ছেলে বাবু মন্ডল, লাইব্রেরি বাজারের আব্বাস উদ্দিনের ছেলে বাপ্পি, চরঘোষপুরের মুক্তার মন্ডলের ছেলে হযরত আলী, বাংলাবাজারের মৃত আকবর আলী ছেলে মক্কার প্রামাণিক, মৃত রোস্তম আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম, গাছপাড়ার জাহের আলী জমির হোসেন, চক ছাতিয়ানির মৃত নূর হোসেনের ছেলে সাহাবুল ইসলাম, চাটমোহরের মৃত নুরুজ্জামানের ছেলে নাহিদ পারভেজ, পাবনা শহরের আটুয়া গ্রামের মৃত মানিক হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন, কাচারীপাড়ার সিদ্দিক মন্ডলের ছেলে পান্না, বাংলাবাজারের সোহরাব প্রামাণিকের ছেলে সাইফুল।

জানা গেছে, জেলার পদ্মার নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ফসলি জমির আবাদ হয়। কৃষকরা সারাদেশে সবজির চাহিদা মিটিয়ে থাকে। সেখানে কৃষকের ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়ার শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে পাবনা সদর উপজেলাধীন চরঘোষপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগে আটটি ট্রাক, চারটি স্কেভেটর মেশিন জব্দ এবং জড়িত ১৪ জনকে আটক করে তিন মাসের জেল দেওয়া হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, এনএসআই সহকারী পরিচালক, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই অঞ্চলে আজ প্রায় পাঁচ মাস ধরে ফসলি জমি থেকে মাটি ও বালু কাটা হচ্ছে। সব প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। এলাকায় এসে এসব অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলে যায়। আবার প্রশাসন মাঝেমধ্যে এসে এদের আটকও করে।  কিন্তু দুয়েকদিনের মধ্যে জেল থেকে বের হয়ে এসে আবারও মাটি কাটা শুরু করে। এসব বালু ও মাটি কাটার সঙ্গে প্রশাসনও জড়িত। মাঝেমধ্যে দায়সারা অভিযান চালানো হয়। স্থায়ীভাবে ফসলি জমি থেকে বালু ও মাটি কাটা বন্ধের দাবি করেন তারা।

পাবনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুরাদ হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতিকারী চরঘোষপুরে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে উত্তোলন করে আসছিল। যার ফলে উক্ত এলাকায় পরিবেশ নষ্ট হওয়াসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং আশেপাশের আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এছাড়াও সম্প্রতি মাটিকাটা ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান করে ১৪ জনকে আটক করে জেল দেওয়া হয়েছে। অবৈধ বালু ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

অবৈধদের বিরুদ্ধে আইনি অভিযানে জনমনে স্বস্তি।

পাবনা প্রতিনিধি: বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ বাস্তবায়নে পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম জেলার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা এবং অবৈধ কার্যক্রম দমনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জেলা প্রশাসনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে গত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পাবনা জেলাধীন বিভিন্ন উপজেলায় পরিচালিত হয়েছে ব্যাপক অভিযান। এই সময়ে ৪৫টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলন ও ফসলী জমি হতে মাটি কেটে বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা জনমনে স্বস্তি এনেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই আট মাসে উল্লিখিত আইনে মোট ৬৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ৬২ জন অবৈধ বালু উত্তোলনকারী ও মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনকে কারাদণ্ড এবং অন্যান্যদের মোট ১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। পাবনা সদর, বেড়া, সুজানগর, ঈশ্বরদী, ভাঙ্গুড়া এবং সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন বালু মহাল ও মাটি কাটার এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। মাসভিত্তিক অভিযানে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে ৭টি, অক্টোবর মাসে ৮টি, নভেম্বর মাসে ১১টি, ডিসেম্বর মাসে ৫টি, জানুয়ারিতে ২টি, ফেব্রুয়ারিতে ৮টি, মার্চে ৭টি এবং এপ্রিল মাসে ৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।
এই সাহসী পদক্ষেপের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই অভিযান কেবল কিছু পরিসংখ্যানের সমষ্টি নয়, বরং এটি আমাদের পরিবেশ রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। পাবনার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর এবং এই বিষয়ে কোনো প্রকার আপস করা হবে না।”
জেলা প্রশাসনের এই কার্যকর পদক্ষেপ বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলা দূর করতে এবং অবৈধ কার্যকলাপ কঠোর হাতে দমন করতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্থানীয় জনগণ এবং পরিবেশ সচেতন মহল এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের অভিমত, আইনের এই ধারাবাহিক প্রয়োগ এবং কার্যকর নজরদারি বজায় থাকলে ভবিষ্যতে কেউ আর পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত হওয়ার সাহস পাবে না।

পাবনার সচেতন নাগরিক সমাজ আশা প্রকাশ করেন, জেলা প্রশাসন তাদের এই কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। পরিবেশ রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জেলা প্রশাসকের এই দৃঢ় পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য এবং সকলের সমর্থন প্রত্যাশী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *