পাবনা’র ভাঙ্গুড়া উপজেলায় মৃত্তিকা সম্পদের যৌক্তিক ও লাভজনক ব্যবহার,
মৃত্তিকা নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি ও সুষম সার ব্যবহার বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
হয়েছে। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, পাবনা’র
আয়োজনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভাঙ্গুড়া উপজেলাস্থ প্রশিক্ষণ হলে ১৯ নভেম্বর
২০২৪ দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এসময় মূখ্য আলোচক হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন মোঃ নাজমুল ইসলাম, উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মৃত্তিকা
সম্পদ উন্নয়ন ইস্টিটিউট, আঞ্চলিক গবেষণাগার, পাবনা। প্রশিক্ষণে কৃষিবিদ
শারমিন জাহান, উপজেলা কৃষি অফিসার, ভাঙ্গুড়া; কৃষিবিদ মোঃ নাজমুল
হোসেন, অতিরিক্ত কৃষি অফিসার, ভাঙ্গুড়া এবং মোসাররাত জাহান, বৈজ্ঞানিক
কর্মকর্তা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, পাবনা সেশন
পরিচালনা করেন।
দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে আলোচকবৃন্দ বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন
উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য প্রতিনিয়ত আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। আবার খাদ্য চাহিদা
মেটানোর জন্য একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষ করা হচ্ছে। এতে জমি
বিশ্রাম পাচ্ছে না। প্রতিটি ফসল চাষের সময় অপরিকল্পিতভাবে নানা রকমের
রাসায়নিক সারের ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেকে অধিক মুনাফার জন্য প্রয়োজনের
তুলনায় অতিরিক্ত মাত্রায় রাসায়নিক সার ও বিষের ব্যবহার করছেন। দিনের পর দিন এভাবে
চলার ফলে জমির উর্বরাশক্তি কমে যাচ্ছে, ফলে ফলন কম হচ্ছে। যে মাটিকে কেন্দ্র করে
চাষাবাদ করা হচ্ছে তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা হচ্ছে না। ফসলের জীবনচক্রে অত্যাবশ্যকীয়
পুষ্টি উপাদান ১৭ টি। মাটি পরীক্ষা করলে জানা যাবে কোন পুষ্টি উপাদান কি
পরিমাণে আছে। বছরের পর বছর অনুমোদিত মাত্রায় ফসফরাস বা পটাশিয়াম সার
জমিতে দেওয়া হলেও মাটি পরীক্ষার পর দেখা যায় মাটিতে এই উপাদানগুলোর মাত্রা অনেক
বেশী আবার অন্যান্য গৌণ উপাদানের মাত্রা খুবই কম। মাটি পরীক্ষার ফলে শুধু সারের
অপব্যবহারই কমবে তাই নয়, সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের ফলে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও ফসল
গ্রহণ করতে পারবে, মাটিতে বসবাসকারী উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে,
জমি বাঁচবে, ফলন বাড়বে, অর্থের সাশ্রয় হবে।
প্রশিক্ষণে ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা গবেষণাগারে মাত্র ২৫ টাকায় মাটি পরীক্ষা করার
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সকল প্রশিক্ষণার্থীদের মৃত্তিকা নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি,
গবেষণাগারে নমুনা প্রেরণের প্রতিটি ধাপ এবং সার সুপারিশ কার্ড অনুযায়ী
জমিতে সার প্রদানে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণে
অন্তত পাঁচ বছরে একবার প্রতিটি জমির মাটি পরীক্ষা করা এবং পাশর্^বর্তী
কৃষকদের মাঝেও বিষয়টি প্রচারের প্রতি প্রশিক্ষণার্থীদের আহবান করা হয়।
দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৫০ জন অংশগ্রহণ করেন।