বিশেষ প্রতিবেদক: ঐতিহ্যবাহী পাবনা প্রেস ক্লাবের ফ্যাসিবাদের দোসর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শহরে চলছে নানা বিতর্ক ও আলোচনা-সমালোচনা।
নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্রে জানা গেছে, পাবনা প্রেস ক্লাবের নামে ১২লাখ ৮৩হাজার ৬৬৩টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। এছাড়াও গত চৌদ্দ বছর ধরে ক্লাব ভবনের লিজমানি বাকি রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা।
বিশ্বস্ত একটি সুত্র জানায়, পুর্বে পাবনা প্রেস ক্লাব একজন হিন্দু ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত মিটার ব্যবহার করছিলো, যেখানে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিলো। আশ্চর্যজনক ভাবে ওই মিটারের বিল সংক্রান্ত নথিপত্র বিদ্যুৎ অফিস থেকে গায়েব হয়ে গেছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিদ্যুত কর্মকর্তা।
বিদ্যুৎ বিল এবং লিজমানি বকেয়া থাকার খবরে ফ্যাসিবাদের দোসর,যারা দীর্ঘ বছর যাবত ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে, ক্লাবের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেরা অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হলেও পাবনার প্রশাসনে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। বরং জেলা প্রশাসনের দ্বিতীয় সারির একজন কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে প্রেসক্লাবের দুর্নীতিবাজ নেতৃবৃন্দের পক্ষ অবলম্বন করে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে।
সামান্য তিন মাস বিদ্যুত বিল বকেয়া থাকার অপরাধে যেখানে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষের কোমরে দড়ি বেঁধে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লাখ লাখ টাকা বিদ্যুত বিল বকেয়া থাকার পরেও পাবনা প্রেসক্লাবের বকেয়া বিদ্যুত বিল আদায় ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় না কোন্ অদৃশ্য কারনে বিদ্যুত বিভাগের কাছে পাবনাবাসী তা জানতে চায় বলে উল্লেখ করেন পাবনা বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক সমাজ নেতৃবৃন্দ।
গত বছর পাবনা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত বাণিজ্য মেলার আড়ালে অবৈধ জুয়ার আসর বসিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। সমালোচনার মুখে জেলা প্রশাসন বাধ্য হয়ে মেলা বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনার পর পাবনার মানুষ প্রেস ক্লাবকে ক্যাসিনো প্রেসক্লাব হিসেবে আখ্যায়িত করে।
পাবনার সচেতন জনগণ এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকেই বলছেন, প্রেস ক্লাবের মতো একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের কার্যকলাপ শুধু জনগণের আস্থা নষ্টই করছে না, বরং সাংবাদিকতার নৈতিকতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সাধারণ মানুষের দাবি, পাবনা প্রেস ক্লাবের অনিয়মের বিষয়গুলো সুষ্ঠু তদন্তের আওতায় আনা হোক এবং দায়ীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। এছাড়া বিদ্যুৎ বিল ও লিজমানি দ্রুত পরিশোধের মাধ্যমে ক্লাবের পুরোনো সম্মান পুনরুদ্ধার করা হোক।
অন্যদিকে, প্রেস ক্লাবের কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়গুলোকে বিভ্রান্তিমূলক ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। তবে, জনগণের চাপ এবং গণমাধ্যমের নজরদারিতে বিষয়টি আরও গভীরভাবে আলোচনায় উঠে আসছে।