পাবনার অন্যতম বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থা কতিপয় ব্র্যাঞ্চ
কর্মকর্তার সুকৌশলে বিপুল পরিমানে অর্থ আত্নসাতের কারণে মারাত্নক ভাবে
আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়লেও আইনগত ভাবে সুবিচার না পেয়ে হুমকীর মুখে পড়ে
গেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, পাবনা সদর থানার মালঞ্চি ইউনিয়নের ভুরভুড়িয়া গ্রামের
মৃত বাছের সরদারের ছেলে মো: টিপু বিশ্বাস প্রমোটর পদে ২৪.১০.২০০৪ থেকে
২৭.৬.২০২১ পযর্ন্ত সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার (অডিট) (সার্ভিস প্রমোটর পদে)
কর্মরত থাকাকালীন প্রতিষ্ঠানের নাজিরগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে থাকাকালীন
১২.১২.২০১৫ থেকে ১৭.২.২০৭ তারিখ পযর্ন্ত ৬টি ভ‚য়া সমিতি সৃষ্টি করে টাকা
বিতরণের নামে ৩০ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেন। তার চাকুরীর জামিনদার ছিলেন তার বাবা।
এ সময় প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালকের মো: লিয়াকত আলী এবং কাযর্কক্রম প্রধান
ছিলেন সাবেক উপ-পরিচালক মো: মতিউর রহমান। এই দুজন কর্মকর্তা ভুয়া বিতরণের
অনৈতিক সুবিধাভোগী ছিলেন।অনন্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা
অত্নসাৎকৃত টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে তিনি ষ্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পাবনা শাখার
একটি চেক প্রদান করে প্রতিষ্ঠানকে। প্রতিষ্ঠান চেকটি রূপালী ব্যাংক পাবনা শাখায়
জমা দেয়। মো: টিপু বিশ্বাসের একাউন্টে সমপরিমাণ টাকা না থাকায় চেক
ডিজঅনার হয়। এরপর তাকে মৌখিক ভাবে ও উকিল নোটিশ প্রদান করেও অনন্য সংস্থা
টাকা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে সংস্থার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার (অডিট) পলাশ চন্দ্র
পাল বিবাদী হয়ে জেলা যুগ্ম জজ ১ম আদালতে মামলা করেন। মামলা নং দায়রা-১২৬/২০২৩।
মামলাটি চলমান রয়েছে। অর্থ আদায়ের জন্য অনন্য সংস্থা আদালতের দ্বারস্থ হলে
প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাৎকারী মো: টিপু বিশ্বাস আদালতে কাউন্টার
মামলা রুজুর জন্য পিটিশন দায়ের করে। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে
(পিবিআই) তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করে। পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা
নিযুক্ত হন পুলিশ সুপার মো: ফজলে এলাহী।
অনন্য‘র আরেকজন অর্থ আত্নসাৎকারী পাবনা সদর থানার রাধানগর মহল্লার খোন্দকার
আলতাব হোসেনের স্ত্রী মিসেস তুরানী সুলতানা। মিসেস তুরানী সুলতানা অনন্য
সমাজ কল্যান সংস্থার সদর আরবান শাখার ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন ২৪
জন সদস্যের কাছ থেকে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৮৪ টাকা উত্তোলন করে অফিসে জমা না দিয়ে
আত্নসাৎ করেন। এছাড়াও গ্রাহকের কাছ থেকে ৩৩ লাখ ১৩ হাজার ২৩৩ টাকা আদায় না
করে তিনি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্থ করেন। মিসেস তুরানী সুলতানার ক্ষতি পূরণ
প্রদানের জামিনদার ছিলেন তার স্বামী খোন্দকার আলতাব হোসেন। উভয়েই টাকা
পরিশোধ না করে প্রতারণা করতে থাকায় অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থার আরবান শাখা
ব্যবস্থাপক হরিপদ সরকার অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, আমলী আদালত-১ এ পিটিশন
মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৭৫/২০২১। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে
(পিবিআই) তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করে।পিবিআই এর তদন্তকারী কর্মকর্তা
নিযুক্ত হন পুলিশ সুপার পরিদর্শক মো: রায়হান। মামলাটি চলমান রয়েছে।
অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থা গভীর ভাবে পযর্বেক্ষন করে দেখেন প্রতিষ্ঠানের অর্থ আদায়ে
সুবিচারের জন্য মোঃ টিপু বিশ্বাস ও তুরানী সুলতানার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার
তদন্ত পিবিআই সুচারু ভাবে করেনি। রহস্যজনক ভাবে দ্#ু৩৯;টি তদন্ত রিপোর্ট একই
ফরমেটে গদবাঁধা বাক্যে প্রনয়ন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে অনন্য সংস্থা মনে
করছে, যতেষ্ট অসঙ্গতি রয়েছে। তদন্তে সত্য, তথ্য-উপাত্তের ঘাটতিও পরিলক্ষিত হয়েছে। এই
অসঙ্গতিপূর্ন তদন্ত প্রতিবেদনে অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থা মারাত্নক ভাবে আর্থিক
ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং তদন্ত প্রতিবেদনে অর্থ আত্নসাৎকারী মো: টিপু বিশ্বাস,
মিসেস তুরানী সুলতানা এবং প্রতিষ্ঠানের দূর্নীতিবাজ সাবেক নির্বাহী পরিচালক
মো: লিয়াকত আলী এবং কাযর্কক্রম প্রধান, সাবেক উপ-পরিচালক মো: মতিউর রহমান
সুফোলভাগী হতে যাচ্ছেন।
অনন্য সমাজ কল্যান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বরনা খাতুন এই দুটি দতন্ত রিপোর্টেই
আপত্তি জানিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পুন:তদন্তের জোর দাবী জানিয়েছেন।