তালা ঝুলিয়ে হুমকি–ধামকি, সাংবাদিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার | পাবনা
পাবনার সাংবাদিক সমাজের প্রাণকেন্দ্র প্রেসক্লাব পাবনায় প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত হলো এক ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী হামলা। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের চতুর্থ তলায় অবস্থিত প্রেসক্লাব পাবনায় একদল সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভয়ভীতি, হুমকি ও তালাবদ্ধ করার ঘটনা ঘটায়। এতে সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ, উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রেসক্লাব সূত্রে জানা যায়, দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল প্রেসক্লাবে ঢুকে সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা বিপ্লবের খোঁজ করতে থাকে। তিনি উপস্থিত না থাকায় সন্ত্রাসীরা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তারা প্রেসক্লাবের অফিস সহকারী মো. জিহাদকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
ঘটনার বর্ণনায় অফিস সহকারী মো. জিহাদ বলেন,
“হঠাৎ করেই একটি বড় দল প্রেসক্লাবে ঢুকে সভাপতির নাম ধরে ডাকাডাকি শুরু করে। তাকে না পেয়ে তারা ভয়ংকর ভাষায় গালিগালাজ করে, হত্যার হুমকি দেয় এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে চলে যায়।”
প্রেসক্লাব পাবনার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা বিপ্লব এ ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে বলেন,
“দীর্ঘদিন ধরে পাবনা প্রেসক্লাবের সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সেই হুমকিরই বহিঃপ্রকাশ এই সন্ত্রাসী হামলা। বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ ও জিডির মাধ্যমে জানিয়েছি। জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
ঘটনার বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন,
“প্রেসক্লাবের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানে হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনা জেলা প্রশাসক শাহেদ মোস্তফা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন,
“এটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
প্রকাশ্য দিবালোকে একটি প্রেসক্লাবকে তালাবদ্ধ করে সন্ত্রাসী তাণ্ডব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিরই প্রতিচ্ছবি—এমন মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সচেতন মহল। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
