
সিরাজুল ইসলাম আপন, চাটমোহরÑভাঙ্গুড়া(পাবনা): পাবনার চাটমোহর উপজেলায় স্বামীকে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তাঁর দুই বছরের শিশু সন্তানকেও হত্যার পরিকল্পনা ছিল বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই নারী ও তাঁর কথিত প্রেমিককে স্থানীয়রা আটক করলে এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর চাটমোহর উপজেলার কাটেঙ্গা এলাকায় শের আলী নামের এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়। শুরু থেকেই তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দেয়। তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে।
ওই সময় কাটেঙ্গা এলাকায় টাকা লেনদেনের বিষয়ে শারমিন নামের এক নারীর সঙ্গে দেখা করতে এলে অনিক (২২) নামের এক যুবককে স্থানীয়রা আটক করেন। বিষয়টি দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শারমিনকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন স্থানীয় লোকজন।
অনিক চাটমোহরের কাটেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় একটি সেফটি আইটেমের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। অপরদিকে, শারমিন দুই সন্তানের জননী। স্বামীর মৃত্যুর পর অনিকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে এলাকায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
স্থানীয়দের দাবি, প্রায় চার মাস ধরে শারমিন ও অনিকের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অভিযোগ রয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর আগেও অনিক নিয়মিত শারমিনের বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
কয়েকজন বাসিন্দা আরও দাবি করেন, শারমিনের ছোট সন্তানকে হত্যার পরিকল্পনার কথাও আলোচনায় উঠে আসে। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, অনিক নাকি একাধিকবার বলেছেন এখন নয়, এক দেড় মাস পরে বিষয়টি করা যাবে।
আরেকটি সূত্র জানায়, নদী (২০) নামে স্থানীয় এক তরুণীর মাধ্যমে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সন্দেহ আরও ঘনীভূত করে। ওই সূত্র ধরেই ধীরে ধীরে পুরো ঘটনা প্রকাশ্যে আসে বলে দাবি স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন নিজেই স্বীকার করেন, অনিকের সঙ্গে তাঁর চার মাসের সম্পর্ক ছিল এবং একবার নিজ ঘরেই তাঁদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। এবং অনিকের মাধ্যমে ঘুমের ওষুধ এনে শারমিন তার স্বামীকে খাওয়ায়।
এদিকে অনিককে আটকের খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা চাটমোহর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সন্ধ্যার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও স্থানীয় সালিশের সুযোগ দিয়ে ফিরে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে অভিযুক্তদের পাবনা জেলা হেফাজতে পাঠিয়েছে।
