পুষ্টিকর খাবার বেশি খায়, সেই বিষয়ে জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক।তিনি বলেছেন, সারাদেশের মানুষের বর্তমানে একটি প্রবণতা চিকন চাল খাওয়া। সেই চালের দাম ৬৫ বা ৬৬ টাকা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৭০ টাকাও হতে পারে। অথচ মোটা চালের কেজি ৪৩ থেকে ৪৬ টাকা, গত দুই মাসে মোটা চালের দামও বাড়েনি। গ্রাম বাংলার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের একটি বিশাল সংখ্যক মানুষ চাল খায়, চাহিদা মিটিয়ে সরকার এসব মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তবে ভাতের বদলে মানুষ যেন ডিম, দুধ ও মাছসহ পুষ্টিকর খাবার বেশি খায় সেই দিকে জোর দিচ্ছি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে চাল খাওয়ার প্রবণতা কমছে। আগে একজন দৈনিক ৪১৭ গ্রাম চাল খেত, এখন এটা কমে ৩১৭ গ্রাম হয়েছে। সামনে এটা আরও কমিয়ে দুইশ গ্রামে আনা হবে। ভাতের বদলে পুষ্টিকর খাবার বেশি খাওয়ায় জোর দেওয়া হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পটাশিয়াম সার আগে আমরা কিনতাম ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলারে। গতবার কিনার সময় এটা এক হাজার দুইশ ডলার লেগেছে। তার মানে বলা যায়, চার গুন বেড়েছে। সারগুলোতে আমরা অনেক বেশি ভর্তুকি দিচ্ছি। এটা না দিলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতো, কৃষিপণ্য উৎপাদন কমে যেত। আমরা এমনটা হতে দেইনি। অথচ ভর্তুকি দিতে হয়েছে অনেক বেশি।
তিনি বলেন, মানুষের আয় বেড়েছে। সে কারণে আগে যারা এক মিল খেত, এখন তারা দুই মিল খায়। খাদ্যে আমরা অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাবারের জন্য দুর্ভিক্ষ, হাহাকার এসব হবে না। তবে গমের দাম বেড়েছে। আটার দাম যখন বাড়ে তখন চালের ওপর চাপ বেশি সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে বড় কর্পোরেট হাউসগুলো প্যাকেটজাত চাল বাজারজাত করছে, তাদের চালের দাম অনেক বেশি। আমি তাদের দাম জিজ্ঞেস করেছিলাম, তারা বলেছে- তারা এই প্যাকেটজাত চাল ৮২ টাকায় বিক্রি করে। আমি বললাম, এই চাল তো খোলা বাজারে ৬৫ টাকা। তারা বললো, আমাদের চাল তো এই ৮২ টাকাতেই চলে, অনেক চাহিদা। মানুষ কিনতে পারে তাই চাহিদা বেশি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এর আগে, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রথা ভেঙে ২০২০-২১ অর্থবছরের ভার্চুয´ালি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর ২০২১-২২ অর্থবছরে সীমিত পরিসরের পাশাপাশি ভার্চুয়ালি বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করা হয়। অর্থাৎ তিন বছর পর স্বাভাবিকভাবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে আজ (শুক্রবার)।
এবারের বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি চতুর্থ বাজেট। আর বাংলাদেশের জন্য এটি ৫১তম বাজেট। পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২০তম বাজেট হলেও ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান সরকার টানা বাজেট দিয়ে যাচ্ছে।