বর্তমানে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে আবার রান্নায় বেশি তেল ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। একটু সচেতন হলেই তেলের ব্যবহার কমিয়ে আনতে পারি। প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদার শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ তেল ও চর্বিজাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণের কথা। এই পরিমাণের পুরোটাই যে ভোজ্যতেল থেকে হতে হবে, তা কিন্তু নয়। সাধারণ খাবার যেমন- শর্করা (ভাত, রুটি) ও প্রোটিন (মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল, বাদাম, বীজ) থেকেই দৈনিক চাহিদার অনে তেল চলে আসে। ফলে রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করার খুব বেশি দরকার থাকে না। ১ গ্রাম তেল বা চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। অধিক তেল-চর্বি খাওয়া মানে অধিক ক্যালরি। এ ছাড়া উচ্চতাপ দিয়ে রান্না ভোজ্যতেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
যেভাবে তেলের ব্যবহার কমাবেন:
ননস্টিক পাত্র বা ফ্রাইপ্যানে সামান্য পরিমাণ তেল ব্রাশ করে, ঢাকনা ব্যবহার করে সহজেই রান্না করা যায়। এ ছাড়া আজকাল রোস্টিং প্যান বা এয়ার ফ্রায়ারও ব্যবহার করা হয় কম তেলে রান্নার জন্য।
অনেক খাবার তেল দিয়ে কষিয়ে অথবা ডুবোতেলে না ভেজে তেল ছাড়া বা খুব সামান্য তেল ব্যবহার করে বেক করে নেওয়া যায়। প্রয়োজনে মাছ-মাংস ও সবজি সেদ্ধ বা ভাপিয়ে নিয়ে তারপর পছন্দ অনুযায়ী উপকরণ মিশিয়ে বেক করে নিলে তেলের ব্যবহার সীমিত করা যায়। বোতল থেকে সরাসরি রান্নার পাত্রে তেল না ঢেলে দিয়ে চামচ দিয়ে মেপে নিন। এতে দৈনিক হিসাব থাকবে।
খাবার রান্না করার সময় যেসব মসলা সচরাচর ব্যবহার করা হয়, সেগুলো তেলের বদলে একটু একটু করে পানি দিয়ে কষিয়ে নিয়েও তেলের ব্যবহার কমানো যায়।
শাকসবজি থেকে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ও ভিটামিন পাওয়া যায়। কিন্তু উচ্চতাপে অনেকক্ষণ রান্না করলে অধিকাংশ পুষ্টি উপাদানই নষ্ট হয়ে যায়। প্রতিদিনের খনিজ লবণ ও ভিটামিন পেতে শাকসবজি ভাপ দিয়ে খেলে সর্বোচ্চ পুষ্টি উপাদান মেলে। এ ছাড়া সালাদ ও স্যুপ করে খেলেও অতিরিক্ত তেলের প্রয়োজন হয় না।
যারা শাকসবজি একেবারেই তেল ছাড়া খেতে পারেন না, তাঁরা প্রথমে ভাপিয়ে নিয়ে তারপর সামান্য তেলের মধ্যে পাঁচফোড়ন, জিরা ইত্যাদি টেলে অথবা পেঁয়াজ বা রসুনের বেরেস্তা করে সবজিটা তার মধ্যে গডড়য়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া সালাদে অথবা সবজি ভাপানোর পর কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
মাছ-মাংস তেল ছাড়া সব মসলা দিয়ে অথবা সঙ্গে টক দই দিয়ে ম্যারিনেট করে রেখে তারপর চুলায় মাঝারি আঁচে নেড়েচেড়ে কষিয়ে রান্না করা যায়। মাছ-মাংসে থাকা তেল রান্না শেষে বেরিয়ে এলে দেখতে অনেকটা একই রকম লাগে।