পিপ ॥ দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স ও ওয়ার্ডবয় ঘুমিয়ে থাকায় পাবনা মানসিক হসিপাতালের এক রোগী আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় তোলপাড় হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। সুত্র জানায়, চরম অব্যবস্থাপনা, কর্তৃপক্ষ ও কর্মব্যরত কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতার কারণে গতকাল শুক্রবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে জহুরুল ইসলাম (৪৩) নামের এক মানসিক রোগী গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। জহুরুল চাপাইনবাবগঞ্জের আড়াইপুর গ্রামের এহসান আলীর ছেলে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আঞ্জুমানী ফেরদৌস জানান, জহুরুলকে চলতি বছরের ২ মে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (১০জুন) সকাল সাড়ে ৫ টার দিকে হাসপাতালের জানালার সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। এ সময় সেখানে দুইজন নার্স ও একজন ওয়ার্ডবয় কর্মরত ছিল। মানসিক হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমায় রায়ের নানা অসাধুতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা ও অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের সুযোগে হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ অন্যরা কর্তব্যকাজে গাফিলতি ও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনা। পরিচালকের এ সব অপকর্ম ফাঁস হয় এই ভীতিতে তিনি কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। ঘটনার দিন কর্তব্যরত নার্স ও ওয়ার্ডবয় প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে ছিলেন। যার কারণে প্রকাশ্যে ভোর বেলায় এ ঘটনা ঘটলেও তারা সেটা প্রতিহত করতে পারেনি। পাবনা মানসিক হাসপাতালে পরিচালকের জন্য একটি আবাসিক ভবন থাকলেও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সে ভবনে থাকেন না। তিনি চাটমোহর উপজেলাতে পূর্বের কর্মস্থলে বসবাস করেন এবং সেখানে সুমাইয়া মেডিকেল হলে চেম্বার করেন। পাবনার মানসিক হাসপাতালটি একটি বিষেশায়িত হাসপাতাল। এখানে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ (সাইকিয়্যাটিক) ডাক্তারকে পরিচালক পদে না দেয়ায় রোগীদের সেবা ও নিরাপত্তা বিঘœ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রতন কুমার রায়কে মুঠো ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই রোগীর কোন তথ্য তার জানা নেই। আমি চাটমোহরে আছি। তবে হাসপাতাল থেকে ফোনে আমাকে জানানো হয়েছে চাপাইনবাবগঞ্জের জহুরুল নামের এক রোগী আত্মহত্যা করেছে।
পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জহুরুলের লাশ ময়না তদন্ত শেষে তার আত্মীয়স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানায় একটি অপমৃত মামলা দয়ের করা হয়েছে।