ডেস্ক নিউজ ॥ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হতে যাচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণের কাজ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে যাচ্ছে টানেল যুগে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে মূল টানেলের। এখন যে ২৫ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ, টানেলের অভ্যান্তরের সড়কে পিচ ঢালাই এবং ইউটিলিটি লাইন স্থাপন। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে বলে টানেল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসিএল) জানিয়েছে। সিসিসিসিএল সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের কাজ ডিসেম্বর মাসেই শতভাগ সম্পন্ন হবে। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে দিন রাত কাজ করছেন চায়নার প্রকৌশলীরা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া এই টানেল নির্মাণের কাজ ৬০ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার চুক্তি থাকলেও তার আগেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাণকারী সংস্থাটি।
সিসিসিসিএল-এর উপ ব্যবস্থাপক হুয়াং ইউয়ে ছুয়ান বলেন ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলের মূল অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে। নদীর দুই প্রান্তে ডায়াডেক্ট নির্মাণ, বোর্ড পাইল কনক্রিট পিয়ার, কলার বিমসহ সব কাজ প্রায় শেষ। এখন নদীর দুই পাড়ে চলছে পিয়ার ক্যাপ ও ফেব্রিকেটেড বক্স গার্ডার নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ।’
বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ ও চায়নার ৩০০ প্রকৌশলীসহ ১০০০ কর্মী রাত-দিন কাজ করছে। বর্তমানে টানেলের সঙ্গে সংযোগের জন্য এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ এবং টানেলের অভ্যান্তরে সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘টানেলের অভ্যান্তরে বিভিন্ন ইউটিলিটি লাইন স্থাপনের কাজও সম্পন্ন করা হচ্ছে। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের জন্য শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যাবে।’
বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এর মধ্যে টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চার লেনের সড়ক নির্মিত হয়েছে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযুক্ত সড়ক হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ওভারব্রিজ।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে এক নির্বাচনী সমাবেশে এই টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। ২০১৭ সালে শুরু হয় মূল টানেল নির্মাণকাজ।