জেলা প্রতিনিধি, পাবনা
পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের নেতাদের দ্বারা লুটপাট হওয়া পাবনা জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমান মজনুর বাড়িসহ ৩ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর পরিদর্শন করেছেন পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব। এসময় তিনি এসবের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আঁশ্বাস দেন। লুটপাট হওয়া মালামাল দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান।
সোমবার (১২ আগষ্ট) দুপুরের ঈশ্বরদীর উপজেলার চরগরগরী আলহাজ্ব মোড় পশ্চিম পাড়ার ভাঙচুর ও লুটপাটের জায়গা দেখতে যান এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। শুধু এটাই নয় তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হোন। এরপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সারাদেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। দেশকে অস্থিতিশীল ও বিএনপির বিরুদ্ধে দোষ চাপানোর জন্য ভাড়াটিয়া গুন্ডাদের দিয়ে বিদেশে বসে হাসিনা এ কাজ করাচ্ছেন। গত ১৬ বছর ধরে পাবনাসহ সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের যেভাবে নির্যাতন করেছে জাতি কখনো ভুলবে না। বিনা অপরাধে নিরপরাধ মানুষদের বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে।
ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতা খাইরুল নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় গত ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে এলাকার শতশত বিএনপি নেতাকর্মী ভিটেমাটি ছাড়া ছিল। আওয়ামী জুলুমবাজ সরকারের পতনের পরে দেশে স্বাধীনতা ফিরে আসায় এখন বিএনপি নয় সব শ্রেণির মানুষ বাড়িতে ঘুমাচ্ছেন। ১৬ বছর ধরে বিএনপির কেউ বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, এখন সময় এসেছ নিজেদের সংঘটিত হবার। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করতে হবে। তাই সবাইকে বিশৃঙ্খলা পরিহার করে সুশৃঙ্খলভাবে চলতে হবে।মানুষের জানমান রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। জনগণের সেবা করতে হবে। মন্দির পাহারা দিতে হবে। যাতে কোন আওয়ামী দুষ্কৃতিকারী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পাবনা সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্তাজ হোসেন, সাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক হামদু মেম্বার, ঈশ্বরদী যুব দলের সদস্য সচিব রকি, ঈশ্বরদীর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নয়ন, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহপ্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসানসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল দুপুরের দিকে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ঈশ্বরদীর চরগরগরী আলহাজ্ব মোড়ের দিকে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে খাইরুল নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়। ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। নিহত খায়রুল ইসলাম (৪২) চরগড়গড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও সাহাপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি।
লাঠিসোঁটা ও জিআই পাইপসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদী নিয়ে যুবলীগের এই নেতা নিরপরাধ সাধারণ মানুষের জমি দখল করতে গিয়েছিল। মানুষজন বাঁধা দিলে সংর্ঘের ঘটনা ঘটলে খাইরুল গুরুতর আহত হয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে তিনি মানা যান। এই ঘটনার পর থেকে যুবলীগ নেতা খায়রুলের সমর্থকরা অত্র অঞ্চলের বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় ভাঙচুর লুটপাট অগ্নি সংযোগ করে। ঘটনার পর থেকে বিএনপির এসব নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।