সিরাজুল ইসলাম আপন, ভাঙ্গুড়া(পাবনা): সারাদেশে ডেঙ্গুর অবস্থা ভয়াবহ। প্রতিদিনই বাড়ছে
শত শত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে মারাও যাচ্ছে অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে পাবনার
ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে যেন ডেঙ্গুবাহিত মশার (এডিস) বাসা। সেপটিক ট্যাংকে
ঢাকনা খোলা আর চারিদিকে নোংরা সেই সাথে যেখানে-সেখানে রাখা থাকে ময়লার স্তূপ।
এসব ময়লায় জন্ম নিচ্ছে মশা, সাথে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও।
রোগীরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালটিতে গেলেও ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে উল্টো স্বাস্থ্য
ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে এ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়া একাধিক
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ।
যে হাসপাতালে প্রতিদিনই মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেখানে
ডেঙ্গুর মশা সংক্রান্ত ব্যাপারে ও নিধনে হাসপাতালটির চিকিৎসকরা নানা উপদেশ দিলেও
নিজেরাই মানছেনা সেসব উপদেশ। উল্টো হাসপাতালটির আশেপাশে ডেঙ্গুর বংশবিস্তারের
নির্বিঘœ স্থান তৈরি করা হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তেমন ভ্রূক্ষেপ নেই বলে জানালেন একাধিক রোগী।
হাসপাতালটিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীও ইদানীং দায়সারা কাজ করেন। আবার
কখনো হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকারও অভিযোগ রয়েছে।
এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী ও তার স্বজনরা জানান, যে
হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনি ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানেই যদি ডেঙ্গু
মশা বিস্তারের স্থান তৈরি করা হয় সেটা বড় কষ্টদায়ক। এ সংক্রান্ত কিছু বললে লোকবলের সংকটের
অজুহাত দেখিয়ে হাসপাতালের কর্মচারীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীও
স্বজনদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। অথচ তাদের কারোরই হাসপাতালটির পরিষ্কারের দিকে তেমন
নজর নেই।
এছাড়া এ হাসপাতালটিতে দালালচক্রের দৌরাত্ম্যও ইদানীং বেড়েছে। বেড়েছে ওষুধ
কোম্পানির লোকজনেরও আনাগোনাও। প্রতিদিনই হাসপাতালটির ইমার্জেন্সি কাউন্টারের
সামনে তাদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। তারা বিভিন্ন রোগীদের প্রলোভন দেখিয়ে ও
রোগীদের সহযোগিতা করার কথা বলে নানা হয়রানি এবং অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
বিস্তর। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দুষলেন কয়েকজন রোগীর স্বজন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানমের দৃষ্টি আকর্ষণ
করলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের হাসপাতাল নিয়মিতই পরিষ্কার করা
হয়। অপরিষ্কার হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে রোগীরা ওষুধের প্যাকেট, খাবারের অবশিষ্ট অংশ ও
নানা ময়লা আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলানোর কারণে মাঝেমধ্যে আমাদের কিছুটা
সমস্যা পোহাতে হয়।