• Fri. Oct 4th, 2024

দৈনিক পাবনার আলো, মাহফুজ আলী কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত

#pabnaralo#, pabna# pabnanews# পাবনারআলো# পাবনার_আলো#পাবনারখবর#পাবনারবার্তা

স্মৃতির অঙিনায় কবি ইদ্রিস আলী
॥ ড. মো. মনছুর আলম ॥

কবি ইদ্রিস আলী ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল কবে ঠিক মনে নেই। পবনার একজন প্রখ্যাত সম্পাদক, কবি, লেখক, সমাজকর্মী এমন একজন গুণি ব্যক্তির সাথে অন্তরঙ্গ হতে কে না ভালোবাসে। আমি যেহেতু এই লাইনেরই লোক; তাই পাবনা আসার পর লাইনের প্লাটফর্মগুলো অনুসন্ধান করতে থাকি। হয়তোবা এরই মধ্যে কবির সাথে কোনো আসর, প্রোগ্রাম বা সভায় কথা হয়েছে; তাই মেলাতে থাকি সূত্রগুলো। তাছাড়া প্রতিটি মানুষকেই কথা শুরু করতে হয় সময় সূত্র ধরেই। আর এটাই নিয়ম। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে শহিদ বুলবুল সরকারি কলেজ পাবনা হতে এইচএসসি পাঠ চুকে ঢাকায় অবস্থান। অতঃপর বিশ^বিদ্যালয় জীবন শেষ করে সাঁথিয়াতে কর্ম জীবন শুরু। ফলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া পাবনা আসা হত না। ২০১০ খ্রিস্টাব্দ হতে (স্ত্রীর চাকরির সুবাদে) আবার পাবনামুখী। বলতে গেলে পাবনা শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন সামাজিক-সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ি। এরই মধ্যে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ কবিতা সংসদ পাবনার একটি প্রোগ্রামে কবি ইদ্রিস আলী আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে আসেন। আমি প্রোগ্রামটির সঞ্চালনায় ছিলাম। আমি বিশেষ অতিথির নাম ঘোষাণা করতেই হাস্যোজ্জ্বল বদনে আমার হাতে ‘ফোল্ডার কবিতাপত্র’ নামক একটি সাময়িকপত্র তুলে দিয়ে বক্তৃতা মঞ্চে উঠলেন। প্রিয় কবির বক্তব্যের চেয়ে আমার মনযোগ সম্পূর্ণরূপে হাতে ধরিয়ে দেওয়া ঐ ‘ফোল্ডার কবিতাপত্রে’র দিকে। কবির বক্তব্য শেষে অন্য অতিথির নাম ঘোষণার ফাকে শুধু এতটুকুই আলাপ, বলতে গেলে আমার পক্ষ থেকে নিবেদন ‘আমিও কি ফোল্ডারে লেখা পাঠাতে পারি’? কবি বললেন নিশ্চয়ই! নিশ্চয়ই। এর দু’দিন পর কবি ইদ্রিস আলী কোথা থেকে যেন আমার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, ভাই ফোল্ডারের বিজয় দিবস সংখ্যা ১৬ ডিসেম্বরে বের হবে তাড়াতাড়ি লেখা পাঠান। সত্য বলতে কি কবি ইদ্রিস ভাইয়ের সেই ডাক, সেই ফোনকল আমার ভিষণ ভালো লেগেছিল; তাইতো স্মৃতির মিনারে এই ডাক এখনো বারে বারে ধ্বনিত হয়। অসম্ভব আপ্লুত হয়েছিলাম ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে আমার লেখা ছাপানো হয়েছে দেখে। অবাক হয়েছিলাম মুক্ত মঞ্চে পত্রিকার মোড়ক উন্মোচনের আগেই আমাদের হাতে হাতে ‘ফোল্ডার’ তুলে দেওয়া দেখে।
কবি ইদ্রিস আলী সমন্ধে আমি কিছু বলতে বা লিখতে গেলে, মুখবন্ধ স্বরূপ উল্লেখিত ঘটনাটির প্রসঙ্গ আসবেই। পরবর্তীতে কবি ইদ্রিস ভাইয়ের সাথে ঘনিষ্ট হবার সুযোগ হয়েছে, একসাথে সাহিত্য আড্ডা, সিনসা সাহিত্য আসর, ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন, ভোক্তা অধিকার আন্দোলন প্রভৃতি সাহিত্য ও সামাজিক আন্দোলনে। এই বিষয়গুলোর খ- খ- স্মৃতি জড়িয়ে থাকলেও প্রথম দিনের স্মৃতির মত এতটা আবেগীয় স্মরণীয় নয়। আসলে সম্পর্কের দার্শনিক অনুভব-অনুভূতিগুলো খুবই জটিল। একজন মানুষকে অনেক দিন ধরে দেখেছি বলে তাকে খুব ভালো চিনি বা ভালো জানি এমনটা যেমন হতে পারে না তেমনি রক্তের সম্পর্ক দিয়েই শুধু সম্পর্ক নির্ণয় হতে পারে এটাও সত্য নয়; ভাবা ঠিকও নয়।
কবি ইদ্রিস ভাইয়ের মাধ্যমেই আমি কবি ওমর আলী স্যারের খোঁজ পাই। একেতো ওমর আলী স্যার কবি অপরদিকে আমার সরাসরি শিক্ষক; তাই পাবনা স্থায়ী হবার পর থেকে ছাত্র হিসেবে স্যারকে দেখার সুতিব্র বাসনা কাজ করছিল। শেষ পর্যন্ত কবি ইদ্রিস আলী ভাইয়ের মাধ্যমে তা সম্পন্ন হলো। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের কোনো এক সময় কবি ইদ্রিস আলী ভাই আর আমি কবি ওমর আলী স্যারের সেই চর কোমরপুর গ্রামে যাই। স্যার তখন বাকশূন্য অবস্থায় একটি হুইল চেয়ারে বসা ছিল। আমি পরিচয় দেওয়াতে কোন কাজ হলো না; তবে ইদ্রিস ভাইকে সহজেই চিনতে পারলেন এবং দু’চোখ দিয়ে পানি ছেড়ে দিলেন। স্যারকে দেখমাত্রা বুকের মধ্যে এক ধরনের শূন্যতা অনুভূত হলো। ওদিকে ইদ্রিস ভাইয়ের চোখের দিকে চেয়ে দেখি তার দু’চোখ দিয়ে যেন বন্যার ঢল নামছে। আপ্লুত অবস্থায় বেশিক্ষণ সেখান থাকতে পারলাম না; ওমর স্যারকে বিদায় জানিয়ে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
কবি ইদ্রিস ভাই কবি ওমর আলীকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর ওমর আলী স্যাররে ইন্তিকালের পর স্যারের মরণোত্তর ‘একুশে পদক’ প্রাপ্তীর জন্য ইদ্রিস ভাই দিনের পর দিন ঢাকা দৌড়াদৌড়ি করেছেন। ওমর স্যারের মরণোত্তর ‘একুশে পদক-২০১৭’ প্রাপ্তির পর পুরস্কার প্রহণ করতে ওমর স্যারের পরিবারের সাথে তিনি ঢাকা গিয়েছেন। পাবনা প্রেস ক্লাব ভিআইপি অডিটোরিয়ামে জাঁকজমক আয়োজনের মাধ্যমে নিজ খরচে পদক প্রাপ্তীর উৎসব করেছেন। শুধু কি তাই, ওমর স্যারকে পাবনার সুধী মহল এবং কবি-সাহিত্যিকদের মাঝে জীবিত রাখতে তিনি ‘কবি ওমর আলী পদক’ জারি করেছেন। ওমর স্যারের মৃত্যর পরের বছর থেকেই অর্থাৎ ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর ওমর স্যারের মৃত্য দিবস উদযাপনের দিন পাবনা প্রেস ক্লাব ভিআইপি অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা, দোয়া ও কবিতা পাঠের আয়োজনের মধ্য দিয়ে তিনি ‘কবি ওমর আলী পদক’ দেয়া শুরু করেন। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর পাবনা প্রেস ক্লাব ভিআইপি অডিটোরিয়ামে ওমর স্যারের মৃত্য দিবস উদযাপন ও ‘ফোল্ডার’ প্রকাশনার ৩৮ বছর উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা, দোয়া ও কবিতা পাঠের আনুষ্ঠানে পাবনার অন্য কবি-সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক ও সুধীজনের মত এই অধমও ‘কবি ওমর আলী পদক-২০১৭’ সম্মাননায় ভূষিত হন। কবি ও গবেষক হিসেবে গবেষণা ও সাহিত্য চর্চার উজ্জ্বল স্বীকৃতি স্বরূপ ‘কবি ওমর আলী সম্মাননা পদক-২০১৭’ অর্জন সত্যিই আমি সেদিন আবেগাপ্লুত হয়েছিলাম।
বাংলার প্রখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের ন্যায় পাবনার কিছু কিছু কবি-সাহিত্যিদের জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন করেন দৈনিক সিনসার সম্পাদক এস এম মাহাবুব আলম প্রতিষ্ঠিত ‘সিনসা সাহিত্য আসর’। ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে ‘সিনসা সাহিত্য আসর’-এর উদ্যোগে দৈনিক সিনসা কার্যালয়ে কবি ইদ্রিস আলীর ৫৬তম জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠিত হলো। অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছিল কবিকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো, পবিত্র কুরআন থেকে তেলওয়াত, কবির জন্য দোয়া, কেক কাটা, আলোচনা এবং সবশেষে নিবেদিত কবিতা পাঠ। আনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, আমন্ত্রিত অতিথিসহ উপস্থিত ছিলেন পাবনার কয়েক ডজন কবি-সাহিত্যিকবৃন্দ। সকল কবি-সাহিত্যিকদের মত এই অধমও সেদিন হাজির হয়েছিলেন কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে লেখা স্বরচিত কবিতা নিয়ে; যা পরবর্তীতে আমার প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘শূন্যে শূন্যে চার’-এ স্থান পায়। সেই কবিতার কয়েকটি চরণ তুলে ধরা হলো-
তারুণ্যের কবি আধুনিকতার কবি
পাবনার কবি
কবি ইদ্রিস আলী ভাইয়ের আজ
পঞ্চান্ন পেরিয়ে ছাপান্ন বছর।
শুভ জন্মদিন তোমার
শুভেচ্ছা সাহিত্য পত্রিকা ফোল্ডার
ছাপা হয় না শুধু তোমারই কবিতা
ছাপা হয় যে সবার।- মনছুর আলম, শূন্যে শূন্যে চার, পৃ. ৪১।
বন্ধুবৎসল সাদা মনের মানুষ কবি ইদ্রিস আলী ভাই প্রায় অর্ধ শতাব্দীকাল সাহিত্য সাধনা করেছেন। আমৃত্যু তিনি সংগ্রাম করেছেন কবি-সাহিত্যিক তৈরীতে, তাদের প্রতিভার স্বীকৃতিদানে, পৃষ্ঠপোষকতা ও উৎসাহদানে তিনি ছিলেন বটবৃক্ষ তুল্য। তিনি নবীন-প্রবীণ লেখদের সমন্বয়গ্রন্থী তৈরী করতে গিয়ে আশ্রয় করেছেন তাঁর ‘ফোল্ডার’ নামক সৃজনশীল কবিতাপত্রকে। আর এভাবেই তিনি সুস্থ ও সুন্দরভাবে টিকিয়ে রেখেছিলেন পাবনার গণমানুষের সাথে তার মানবিক সম্পর্কের আদান প্রদানকে। ইদ্রিস ভাই বিশ^াস করতেন আত্মসর্বস্ব ব্যক্তিস্বাতন্ত্রতার ভিতে পা রেখে আপন সৃজনশীলতার ক্ষেত্রটিকে সজীব রাখা প্রায় অসম্ভব, তাই তিনি ছুটে গিয়েছেন মানব থেকে মানবান্তরে, নবীন কবি-সাহিত্যিক থেকে প্রবীণ কবি-সাহিত্যিকদের দ্বারে দ্বারে। আর এর জন্য তাঁর গুণতে হয়ে নিজ পকেট থেকে আর শুনতে হয়েছে প্রিয় বন্ধু, কখনো পাগলা কবি, আবার কখনো বা ‘শালা একটা পাগল’।
কবি ইদ্রিস আলী সম্পাদিত সৃজনশীল পত্রিকা ‘ফোল্ডার’ নামটা বেশ মজার। যার এক অর্থ ছোট বই বা পুস্তিকা; অপর অর্থ পশুপালক বা রাখাল। আমরা প্রথমটির চেয়ে দ্বিতীয়টিই বেশি খুঁজে পেয়েছি তাঁর চরিত্রে। একজন রাখাল যেমন সরাদিন মাঠে-প্রান্তরে গরু-মেষ চড়ান ঠিক তেমনি কবি ইদ্রিস আলী সারাক্ষণ কবি-সাহিত্যিকদের চড়িয়েছেন। তাদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ছড়া, কবিতা, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ছোট গল্প, সংবাদ, ফটো সংবাদ, পাবনার লেখকদের বই প্রকাশের সংবাদ এমন কি বিভিন্ন সংগঠনের সংবাদ সংগ্রহ করেছেন; নিজ খরচে ছাপিয়েছেন। ছাপানো ফোল্ডার আবার বিনা পয়সায় প্রত্যেকের হাতে হাতে পৌঁছে দিয়েছেন। কেউ লেখা পাঠাতে গড়িমসি করলে ফোন করে তাগাদা দিয়েছেন। আসলে মানুষকে ভালোবাসতে গেলে তার কাছে আসতে গেলে মানুষের আপনজন হতে গেলে যে দীক্ষা প্রয়োজন; তার সবটুকুই কবি ইদ্রিস আলী ভাইয়ের মধ্যে ছিল। কবি ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত ৪১ বছর ধরে ফোল্ডারের সম্পাদনা করেছেন এবং এর বিভিন্ন সংখার প্রচ্ছদ, প্রচ্ছদপত্রের ছত্রে ছত্রে লেখা, সংখ্যার নাম, সংখ্যা অনুসারে ছবি ও সম্পাদকীয় দিয়ে তিনি সাজিয়েছেন।
আমরা জানি একটি ভাষার শ্রেষ্ঠ প্রকাশ হচ্ছে তার কাব্য বা কবিতা। সমালোচকের মতে, ‘এড়ষফবহ ঃযৎবধফ ড়ভ যঁসধহ ঃযড়ঁমযঃ’। ভাষা পরিবেশনির্ভর, পরিবেশকাতর; সমাজের জন্য নির্মিত হয় ভাষা। কাব্য যে সমাজে বিকশিত হয়, বাঁচে, আধুনিকতার দিকে ধাবিত হয়, সর্বজনীনতা লাভে সক্ষম হয়- ভাষা সে সমাজেরই চাহিদার ফসল। কবিতার আবেদন, ভাব নঞর্থক হলে তার ভাষাও নীরস, আবেদনশূন্য ও তাৎপর্যহীন হয়। দুর্বোধ্য ভাষা বলে স্বতন্ত্র ভাষা নেই, ওটা ভাষা ব্যবহারের কৃত্রিমতা। আমি মনে করি এটা কবির ভাষা-সঙ্কট; যা কবিতাকে কোটরাগত করার অপচেষ্টা বা অপকৌশল। সমালোচকের মতে, “ দুর্বোধ্যতার বিলাস কবিতার পক্ষে প্রায় আত্মহত্যারই শামিল”। কবি ইদ্রিস আলী বা কাব্য ইদ্রিস আলী নির্ধারণ কোনাটাই আমার এ রচনার বিষয় বা শিরোনাম নয়; কিছু প্রীতি কিছু স্মৃতি, অনুভব-অনুভূতি শেয়ার করা হলো মাত্র। কবি ইদ্রিস ভাইয়ের সাথে অবাধে মেশা, কাব্য চর্চার সুযোগ এবং সামাজিক-সাহিত্যিক সারথি হিসেবে আমি তাঁর কবিতা পাঠে যতটুক অনুভব করেছি; তাঁর লেখা জটিলতাহীন, সহজ-সরল এবং সুখপাঠ্য। কবি ইদ্রিস আলী সময়ের চাহিদাকে, সময়ের সৌন্দর্যকে, উচ্ছল আবিলতাকে তিনি তাঁর নিজস্ব রুচিবোধ, সূক্ষè অনুভূতি, স্বীয় সংবেগ ও সংবৃত্তিতে সাজিয়েছেন, সমাজ সংশোধন ও জাগরণের মানসিকতায় উদ্দীপ্ত হয়েছেন। তাঁর কাব্য সাহিত্যের শৈলী ছিল অত্যন্ত সারল্যপূর্ণ মাধুর্যময়। মানবতা, মানবপ্রেম, ঋতুচক্র, প্রকৃতি, মা-মাটি-দেশ, প্রতিবেশ-পরিবেশ, মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, উৎসবাদি সর্বোপরি গ্রামীণ অনুসঙ্গ মূর্ত্ত্যয়ণ হয়ে উঠেছে তাঁর বেশিরভাগ কাব্যে। তিনি প্রায় অর্ধ শতাব্দীকাল সাহিত্য সাধনা করেছেন, সংগঠন করেছেন, সংগঠিত করেছেন সর্বোপরি সমাজ সংস্কারে ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জুন ক্ষণজন্মা কবি আমাদের এতিম করে পরপারে চলে যান। তাঁর বহুমুখী কর্মপ্রবাহ যা পাবনা ছাপিয়ে সারা বাংলাদেশে প্রতিনিধিত্ব করুক এই প্রত্যাশা। প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির যোগ-বিয়োগে ফলশূন্য হলে সে প্রত্যাশা মূল্যহীন। তাই আসুন আমরা তাঁর ফেলে রাখা কর্ম সম্পাদন করি, তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করি; নতুন প্রজন্মের মাঝে তাঁর আদর্শ, চিন্তা-চেতনা ও কর্ম ছড়িয়ে দেই। তাহলেই কেবল কবি ইদ্রিস ভাইয়ের আত্মা শান্তি পাবে। সাহিত্য ও বিতর্ক ক্লাব পাবনা ইতোমধ্যে কবি ইদ্রিস ভাইয়ের দেখানো পথ অর্থাৎ কবি ওমর আলী স্যারের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে এবং ভবিষ্যতে ‘কবি ওমর আলী পদক’ প্রদান এবং কবি ইদ্রিস আলী ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকী পালনেরও চিন্তা-ভাবনা করছে। প্রিয় কবির ২য় মৃত্যু বার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি; মহান আল্লাহ প্রিয় কবিকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন, আমিন।

(লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক, সভাপতি সাহিত্য ও বিতর্ক ক্লাব, পাবনা।)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *