• Fri. Oct 4th, 2024

দৈনিক পাবনার আলো, মাহফুজ আলী কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত

#pabnaralo#, pabna# pabnanews# পাবনারআলো# পাবনার_আলো#পাবনারখবর#পাবনারবার্তা

শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে

অগ্রগামী দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে প্রাকপ্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নতুন যে শিক্ষাক্রমের রূপরেখার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে দেশে বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
নতুন রূপরেখা অনুযায়ী, কেবল দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ওপরই এসএসসি পরীক্ষা হবে। এছাড়া একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আলাদা দুটি বোর্ড পরীক্ষা হবে। দুই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে হবে এইচএসসির ফল। চূড়ান্ত রূপরেখায় বাতিল করা হয়েছে পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা। অর্থাৎ, দশম শ্রেণির আগে কোনো কেন্দ্রীয় বা পাবলিক পরীক্ষা হবে না। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কার্যত পরীক্ষার্থীতে পরিণত করা হয়েছিল।
এ দুটি পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করার বিষয়টি প্রশংসনীয়। জানা গেছে, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষাই থাকবে না। ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি নিরূপণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে সত্যিকার অর্থে আনন্দের সঙ্গে শিখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০ শতাংশ আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এক্ষেত্রে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে এক্ষেত্রে বহু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
দেশের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত উপকরণ, শিক্ষক ও দক্ষ শিক্ষক সংকটের বিষয়টি বহুল আলোচিত। এ অবস্থায় ঘনঘন শিক্ষাক্রম তৈরি বা পরিমার্জন করা হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এর কী প্রভাব পড়বে, তা বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ আমাদের মনে আছে, নতুন একটি পদ্ধতি চালুর কয়েক বছর পরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষক সেই পদ্ধতি সম্পর্কে কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। শিক্ষাক্রমে পরিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। একইসঙ্গে দেশের মেধাবীরা যাতে শিক্ষকতা পেশায় আসেন সেজন্য আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আগামীতে বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়বে। কাজেই আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে স্কুল পর্যায় থেকেই এ বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা অর্জন করতে পারে, তেমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে কোচিংনির্ভর না হয়, তেমন পাঠ্যবইও তৈরি করতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ´বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ও মাথ্যমিক স্তর থেকেই যথাযথভাবে তৈরি করতে হবে। দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি তারা যাতে উন্নত নৈতিকতা ও উচ্চ মূল্যবোধের চর্চায় আগ্রহী হয়, তেমন বোধও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাগ্রত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *