• Fri. Oct 11th, 2024

দৈনিক পাবনার আলো, মাহফুজ আলী কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত

#pabnaralo#, pabna# pabnanews# পাবনারআলো# পাবনার_আলো#পাবনারখবর#পাবনারবার্তা

রোজার দ্বারা রুহের রোগমুক্তি ঘটে

আব্দুল হামিদ খান

রমজান মাসে রোজাদারদের জন্য রোজা রুহানী রোগের
চিকিৎসাস্বরূপ। রোজা রুহানী রোগমুক্ত করে। যদি রোজা
দ্বারা রোজাদারের রুহানী মুক্তি না ঘটে তাহলে বুঝতে হবে
যে, সেই রোজা খাঁটি রোজা নয়, ¯্রফে উপবাস। তাই
খুব সাবধানতার সাথে রোজা পালন করতে হবে। এ বিষয়ে
আমাদের প্রিয় নবী মুহম্মদ (সা.) বলেন “অনেক সিয়াম
পালনকারী এমন আছে কেবল পিপাসা ছাড়া আর তার ভাগ্যে
কিছুই জোটে না। আর এমন অনেক তারাবীহ্ধসঢ়; ও নৈশ
ইবাদাতকারী আছে যারা রাত জাগা ছাড়া আর কিছুই লাভ
করতে পারে না।” রোজাদার ব্যক্তি অশ্লীল ও কটুভাষী হতে পারে
না। যে ঘুষ দুর্নীতি থেকে মুক্ত হতে পারলো না , লোভ আর
মিথ্যা যে পরিহার করতে পারল না, তার রোজার কি মূল্য আছে
?

মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা
কাজ পরিহার করে না তার শুধু পানাহার ত্যাগ করায় আল্লাহর
কোনই প্রয়োজন নেই।” (বুখারী) এরা কারা? ঐ রোজাদার
যাদের শুধু দেহই রোজা রেখেছে কিন্তু মন রোজা রাখেনি;
তাদের কণ্ঠই পিপাসায় শুষ্ক ছিল, অন্তর পিপাসার্ত ছিল না।
রহমতের কাওসার তাদের জন্য নয়, যাদের অন্তঃকরণ পিপাসার্ত

Ramadan 2024: Five incredible benefits of fasting during Ramzaan has on  your body – India TV

ছিল না। রোজাদার ব্যক্তির দেহ মানবীয় কিন্তু তার রুহ বা
আত্মা ফেরেশতার জীবনযাপন করে। সে সব রকম জাগতিক
বস্তু থেকে পবিত্র এবং পার্থিব প্রয়োজন থেকে দূরে
অবস্থান করে। তার একটাই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, তা হলো আল্লাহর
প্রতি আনুগত্য এবং আল্লাহর হুকুম পালন। সে জন্যই
রোজাদার এত তৃষ্ণার্ত, ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত-শ্রান্ত অথচ তার
সামনে এত মজাদার খাবার থাকা সত্ত্বেও সে পানাহার
থেকে বিরত থাকে। সে বস্তুগত চাহিদা থেকে মুক্ত এবং
পার্থিব প্রয়োজন থেকে দূরে থাকার ঐ পরিমাণ চেষ্টা
করে যে পরিমাণ তার প্রকৃতি ও স্বভাব তাকে অনুমতি দেয়।
একজন রোজাদার হবে পূর্ণ আদর্শ মানুষের নমুনা। সে
কারো গীবত করে না, কাউকে মন্দ বলে না, কারো সাথে
জাহেলী আচরণ করে না, সে অন্যায়ের বদলা ন্যায় দ্বারা নিয়ে
থাকে। সে রাসুল (সা.) এর সুন্নত পুরোপুরি মেনে চলে।

মানুষের জৈবিক চাহিদার মধ্যে দুটি জিনিস রয়েছে।
একটি হলো পশুত্ব আর আর একটি হলো মনুষ্যত্ব। পশুত্ব
যেখানে মানুষকে পশুর অধম বানিয়ে ফেলে, সেখানে মনুষ্যত্ব
তাকে সত্যাশ্রয়ী মহামানবের আসনে সমাসীন করে।
অতএব, লক্ষণীয় মানসিক উন্নতিই মনুষ্যত্বের মাপকাঠি।
রোজা আমাদের পশুত্ব দমন করে নফসকে সঠিক পথে
পরিচালনা করে। মানব প্রবৃত্তিতে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ,
মদ ও ষড়রিপুর তাগিদ মানুষকে মানবীয় মর্যাদা থেকে
পশুত্বের স্তরে নামিয়ে আনতে প্রতিমুহুর্তে চেষ্টারত।
অবাধ্য দূর্দম জন্তু গুলোকে যেমন অনাহারে রেখে বশে আনা
যায়, মানুষের প্রবৃত্তি তদ্রুপ দূর্দম পশুরই সমতুল্য। ক্ষুধা-
তৃষ্ণার জ¦ালায় ফেলে তাকে বশীভূত করা যায়। প্রবৃত্তিকে বশে

আনা কেবলমাত্র একটি উপকারই নয়; বরং তা বহুবিধ উপকার ও
মঙ্গলের জন্যই স্পর্শমণিস্বরূপ। হযরত যুননুন মিশরী (রা.)
বলেন,“ যখনি আমি তৃপ্তি সহকারে আহার করতাম , তখনই
কোন না কোন পাপ কাজ হয়ে যেত।” মাহে রমজানের
রোজার উদ্দেশ্য হচ্ছে কামভাব ও পশু প্রবৃত্তিকে দমন করা এবং
ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান হওয়া। বছরের ১১ মাস প্রচুর খাওয়ার
পর রমজানের একমাস কিছুটা কম খেয়ে সংযম সাধনা
করলে তেমন কোন অসুবিধাই হয় না। বরং ইবাদাত
বন্দেগীতে রুহানী শক্তি বৃদ্ধি পায়। রোজার প্রভাবে কাম
প্রশমিত হয়। যার ইন্দ্রিয় তৃষ্ণা প্রবল তাকে রোজা রাখার
উপদেশ দেওয়া হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, “হে
যুবকগণ ! তোমাদের মধ্যে যে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ
করতে সক্ষম সে যেন বিবাহ করে; আর যে সক্ষম নয় সে যেন
রোজা রাখে। কেননা প্রবৃত্তি দমনের জন্য এটাই উত্তম
ব্যবস্থা।” তাই আল্লাহ তায়ালা ১২ মাসের মধ্যে একটি
মাস ইন্দ্রিয় সংযমের জন্য রোজা পালনের ব্যবস্থা করেছেন।
তিনি নিশ্চয়ই মানুষের মঙ্গলের জন্যই সিয়াম সাধনাকে
শরীয়তের বিধান হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *