০২-০৮-২০২৩
দার্শনিক অ্যারিস্টোটল বলেছিলেন, “শিক্ষার শিকড়ের স্বাদ তেঁতো হলেও এর ফল মিষ্টি।”
একথাটি তাৎপর্য আর কেউ অনুধাবন না করতে পারলেও ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭৩ সালে সাঁইত্রিশ হাজার প্রাথমিক
বিদ্যালয়কে এক সঙ্গে সরকারিকরণ করেন। তিনি জানতেন দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে উপযুক্ত বিনিয়োগ হল প্রাথমিক শিক্ষা খাত। বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব
অনুধাবন করে অনেক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেছেন এবং এখনো করছেন।প্রতিটি গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন নিশ্চিত করতে কাজ করে চলেছেন।
বছরের প্রথম দিনেই সকল শিক্ষার্থী একযোগে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছেন বই উৎসবের মাধ্যমে।তারপরও প্রাথমিক শিক্ষায় কিছু সমস্যা রয়েই গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষার বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল গুণগত শিক্ষার অভাব।শিক্ষকরা পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে নিয়োগ পাচ্ছে।কিন্তু এক রহস্যজনক কারণে
শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক বিষয়গুলো কেন যেন শিখে আসতে পারছেনা মাধ্যমিকে। সরকারের ব্যয় প্রতি বছর প্রাথমিকের বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু এ ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাওয়া দরকার। আমাদের এক
শ্রেণির মানুষ আছে তারা তাদের ছেলে সন্তানদের স্কুলে না পাঠিয়ে কর্মে পাঠায় এই কারণে যে কিছু অর্থ উপার্জন হবে। এই ধারণা আমাদের শতভাগ শিক্ষার হার অর্জনের ক্ষেত্রে বড় বাধা।
এছাড়া জনসংখ্যার আধিক্য তো আছেই। কারণ বেশি জনসংখ্যা হলে স্কুল কলেজ ও বেশি লাগবে।
দেশের বাজেটের একটা বিশাল অংক প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ রাখা হলেও বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ বলে কিছুটা সমস্যা হয় বৈকি!
সমস্যা যেমন রয়েছে সমাধানের উপায়ও রয়েছে। প্রথমেই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষার যাবতীয় উপকরণ থাকতে হবে বিদ্যালয়ে। নিয়োগ
দিতে হবে মেধাবীদের যাদের মাধ্যমে গড়ে উঠবে আমাদের আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। শিক্ষকদের যেমন ভাল প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলতে হবে একই ভাবে তাদের শিক্ষা দেওয়ার বিষয় টি
নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে মিড ডে মিল চালু এবং তা অব্যাহত রাখতে হবে। তা না হলে শিশুরা খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ে দুপুরের পরে।এমনকি অনেক বাচ্চারা সকাল
বেলায় না খেয়েও আসে বিদ্যালয়ে।
প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রম যেমন সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে তেমনি প্রতিষ্ঠানের ভবনও আকর্ষণীয় ও খেলা উপযোগী করে তৈরি করতে হবে। তবেই শিশুরা প্রাথমিক স্তরের
পড়াশোনা আগ্রহের সাথে করবে এবং শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার শূন্যের কোঠায় আসবে।