২৭-৭-২০২৩
বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নয়ন এখন সুস্পষ্টত লক্ষণীয়। দৃষ্টিজুড়ে প্রতীয়মান হয় ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন। উন্নয়ন টেকসই করতে আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রেও টেকসই শিক্ষা নিয়ে ভাবতে
হবে।শিক্ষা ব্যবস্থায় একদম শুরুর স্তরটি হল প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা।প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা হলো আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পূর্ববর্তী এক বছরের শিক্ষা যেখানে শিশুর সার্বিক বিকাশের সাথে সাথে
আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভিষেক ঘটে। ৫-৬ বছর বয়সী শিশুদের শারিরিক, মানসিক, সামাজিক ও বুদ্ধি বৃত্তিক বিকাশের মজবুত ভিত্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে প্রাক প্রাথমিক
শিক্ষা।
প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার প্রধানতম উদ্দেশ্য হল আনন্দময় ও শিশুবান্ধব পরিবেশে বিভিন্ন খেলা ও কাজের মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই
তাকে সু-অভ্যাস গুলো শেখানোর পাশাপাশি চর্চা করাতে হবে।দ্বিতীয়ত, শিশুদের প্রাকৃতিক পরিবেশ, সৌন্দর্য্য, নান্দিকতা ও সুকুমার বৃত্তি বিকাশের সহায়ত করা। এর মাধ্যমে সৌন্দর্য্য ও
সৃষ্টিশীলতার পূজারী হিসেবে তৈরি হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।তৃতীয়ত, পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে হবে আমাদের
এই শিশুদের। শিশুদের যেমন বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তুলতে হবে এবং একই সাথে ধর্মীয় মূল্য বোধ এবং নৈতিকতার কথা গুলো শোনাতে হবে।চতুর্থত, শিশুকে পারস্পরিক সহযোগিতা,
সমঝোতা ও সহমর্মিতার মত বিষয়গুলো যেন শিক্ষা পায় তা হাতে-কলমে শিখিয়ে দিতে হবে।স্বাস্থ্য সকল কিছুর মূল তাই শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে এর ফলে দৈহিক
বিকাশ ঘটবে যা খুব জরুরী। শিশু বয়সে তাদের কে প্রারম্ভিক গাণিতিক ধারণা যৌক্তিক চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা অর্জনে আমাদের মনোযোগী হতে হবে। পরিবেশের নিত্য
নৈমিত্তিক ঘটনা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কারণ অনুসন্ধানে সহায়তা করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। শিশুদের সব সময় শেখার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে।ছবি আঁকা, ছড়া,
গান, কবিতা আবৃতি ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের ইচ্ছা ও আগ্রহকে জাগিয়ে তোলা। আমরা সবাই একটা বিষয় লক্ষ্য করি, শিশুরা নতুন নতুন বিষয় এবং আশে পাশের পরিবেশ সম্পর্কে
জানতে চায়। এই কৌতুহলকে বাড়াতেই কাজ করতে হবে এই প্রাক-প্রাথমিক স্তরে। শিশুরা যেন তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে পারে এ ব্যাপারে উৎসাহ দিতে হবে প্রাক প্রাথমিক
স্তরে। না হলে বিজ্ঞানী, দার্শনিক কিংবা বড় বড় গুণীব্যক্তির সৃষ্টির পথ বন্ধ হয়ে যাবে। প্রাক প্রাথমিক যেহেতু প্রাথমিক স্তরের পূর্বের ধাপ সুতরাং এ ধাপেই শিশুদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ,
আত্মবিশ্বাস এ গুলো জাগ্রত করতে হবে। এগুলো যখন আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎরা নিজেদের মধ্যে স্বযত্নে লালন করবে তখন থেকেই এদেশ একদিন শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞান-গরিমায়
আলোকিত বাংলাদেশ হবে। সেদিনের প্রতীক্ষায় থাকবো আমরা সবাই।
লেখক-
মো.তরিকুল ইসলাম
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
সুজানগর,পাবনা