প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহৃস্পতিবার বিকেলে পাবনার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের সাথে ভার্চুয়ালি নির্বাচনী জনসভায় যোগদান করেন। এ সময় পাবনা ৫টি নির্বাচনী আসনেই অংশগ্রহনমুলক নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যাক্ত করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরো প্রধানমন্ত্রী বানানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি। এ সময় প্রিন্স পাবনাবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরিচা নগরবাড়ী দৌলতদিয়া ওয়াইটাইপ ব্রীজ চান। দুপুর থেকেই পাবনা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্ত¡র কানায় কানায় পরিপুর্ণ হয়ে উঠে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি পাবনা বাসীর পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহন মুলক হবে বলে বক্তব্য রাখেন। এ সময় এমপি প্রিন্স আরো বলেন, পাবনাবাসীকে শেখ হাসিনার সরকার অনেক দিয়েছে এরপরও পাবনা মানসিক হাসপাতাল কে বিশ^মানের, কাজির হাট টু আরিচা দ্বিতীয় পদ্মাসেতু, ঈশ^রদী বিমানবন্ধর চালুর দাবি করেন।
শেখ হাসিনা কার বক্তব্যে বলেন, অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘনকারী, সেনা রুলস লঙ্ঘনকারী, ক্ষমতা দখলকারী এক জেনারেলের পকেট থেকে যে দল তৈরি হয়েছে, সেই দল বিএনপি ভোটের কি বোঝে? তারা গণতন্ত্রের মানে বোঝে? এমন প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে পাবনাসহ পাঁচ জেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসবে না। নির্বাচনে আসবে কিভাবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ফলাফলটা কি ছিল? বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট মাত্র পেয়েছিল ৩০টা আসন। আর আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছিল ২৩৩ আসন। তারা এখন বড় বড় কথা বলে! ভোটের কথা বলে! তারা ভোটের কি বোঝে? বিএনপির জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে সংবিধানলঙ্ঘনকারী, সেনা রুলস লঙ্ঘনকারী, ক্ষমতা দখলকারী এক জেনারেলের পকেট থেকে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। এক জেনারেলে পকেট থেকে। ভোট চুরি করার কাজ করেছিল। ক্ষমতায় বসে থেকেই একদিকে সেনা প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান আবার ইলেকশনও করেছে। তাদের সব কিছুই অবৈধ।’
বিএনপি মানুষকে মানুষ মনে করলে পুড়িয়ে মারত না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা মানুষকে মানুষ মনে করতে পারে না। নইলে আপনারা দেখছেন রেলে আগুন দিয়ে কিভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারতেছে। একটা মা তার সন্তাানকে বাঁচাতে বুকে ধরে রাখছে। বাসের ভিতরে হেলপার ঘুমিয়ে আছে আগুন দিচ্ছে, ট্রাকে আগুন দিচ্ছে। একটি ছেলেকে ট্রাকে বসিয়ে রেখে বাবা পানি আনতে গিয়ে দেখে ছেলে আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছে। একইভাবে ২০১৩ সালে ১৪ সালে ১৮ সালে একইভাবে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর নামে ৫৮২টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ৬ টা ভূমি অফিস, ৩২৫২ গাড়ী, ২৯ টি রেল, ৯ টি লঞ্চ আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল।’
তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আর একটি কুলাঙ্গার আছে ২০০১ সালে তার হাওয়া ভবন ছিল। চাঁদা না দিলে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারত না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিত। সে অবৈধ যত কাজ আছে সবই করেছে। মানি লন্ডারিং থেকে শুরু করে অস্ত্র চুরাকারবারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র আনয়ন, দুর্নীতি সবই সে করেছে। বিদেশ থেকে এসে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। এজন্য তার সাজাও হয়েছে। এখন আবার বিদেশে বসে ভোটের কথা বলে গণতন্ত্রের কথা বলে। সে তো রাজনীতি করবে না। আবার বিদেশে বসে থেকে হুকুম দিয়ে উস্কানি দিয়ে নেতাদের দিয়ে মানুষ হত্যা করাচ্ছে। নির্বাচন বানচাল কবার পাঁয়তারা করতেছে।’
এ সময় পাবনাবাসী পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল এবং পাবনা-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি। তারা উভয় পাবনার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং আবারও বেশ কয়েকটি উন্নয়নমুলক কর্মকান্তে প্রস্তাব করেন। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া-কাজিরহাট ওয়াই সিস্টেমে সেতু, ঢাকা-পাবনা ট্রেন, পাবনা মানসিক হাসপাতাল সংস্কার ও ঈশ্বরদী বিমানবন্দর কয়েকটি প্রকল্প চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্বাস দেন।
ভার্চুয়ালী জনসভায় পাবনা প্রান্তে বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল ও সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা ৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স এমপি।
পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি পাবনাকে ভালবেসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও ডেপুটি স্পিকার দিয়েছেন। আমরা কৃতজ্ঞ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পীকার ও পাবনা ১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামসুল হক টুকু এমপি, পাবনা ২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আহমেদ ফিরোজ কবীর এমপি, পাবনা ৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মকবুল হোসেন এমপি, পাবনা ৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো, গালিবুর রহমান শরীফ, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা ইয়াসমিন জলি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, পাবনা পৌর মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারোফ হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. তসলিম হাসান সুমন, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান মামুন, পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদ সভাপতি আব্দুল মতীন খান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান শহীদ, পাবনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল আহাদ বাবু, জেলা যুবলীগের আহবায়ক আলী মর্ততুজা বিশ^াস সনি, যুগ্ন আহবায়ক শিবলী সাদিক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আহমেদ শরীফ ডাবলু, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুন নাহার রেখা, যুবমহিলা লীগের সভাপতি এ্যাড. আরেফা খানম শেফালি,সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর ফেরদৌস কনা, কৃষক লীগের সভাপতি শহীদুর রহমান শহীদ, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান রকি, শ্রমিক লীগের সভাপতি ফোরকান আলী, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার প্রমূখ।