• Fri. Oct 11th, 2024

দৈনিক পাবনার আলো, মাহফুজ আলী কাদেরী কর্তৃক সম্পাদিত

#pabnaralo#, pabna# pabnanews# পাবনারআলো# পাবনার_আলো#পাবনারখবর#পাবনারবার্তা

গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় জ্বালানি হিসেবে কদর বেড়েছে দইলির

ঈশ^রদী প্রতিনিধি ॥ সারাদেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে পাবনার বিভিন্ন উপজেলাসহ ঈশ্বরদী উপজেলার গ্রাম অঞ্চলে জ্বালানি হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গোবরের দইলি। পাবনা জেলার প্রায় উপজেলার নারীরা এই গোবরের দইলি নিজেদের জ্বালানির চাহিদা মিটিয়ে, আবার অনেকে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। জ্বালানির অভাব দূর করতে ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গোবরের দইলি’র। একসময় এ অঞ্চলের নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন রান্নার জন্য গরুর গোবর কুড়িয়ে এনে কাঠের লাঠি তৈরি করত। কিন্তু বর্তমানে গ্যাস, কাঠ ও অন্যান্য জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে গ্রামের গরু পালনকারী অধিকাংশ পরিবার গোবরে তৈরি দলির দিকে ঝুঁকেছে।
স্থানীয়রা ভাবে খোঁজে নিয়ে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলার যেসব বাড়িতে গরু আছে। সেসব বাড়ির বেশিরভাগ নারীরা গবরের দইলি তৈরি করে। অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত মুঠে-ঘুটে তৈরি হয়। আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের জ্বালানি রেখে বাকি জ্বালানি বিক্রি করে দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও দেখা গেছে সারাবছরই মুঠে বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকে নারীরা। এতে করে নিজের রান্নার কাজের জন্য যেমন জ্বালানি ঘাটতি থাকছে না। অপরদিকে পরিবারগুলো আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে। তৈরি করা গবরের লাঠি বিক্রি করে আয়ও করছেন অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, এক সময় বাড়ির সদস্যদের খাবারের জন্য অনেক চিন্তা করেছি। এখন গোবরের দইলি ও ঘুটে তৈরি করে নিজের জ্বালানি ব্যবহারের পাশাপাশি, বিক্রি করে কিছু টাকা আয় হচ্ছে । হাতে কিছু টাকাও জমেছে। আশপাশের বাড়ির নারীরা এসে গোবরের তৈরি লাঠি ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ কাজে ভালই লাভ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যাদের গ্যাস বা কাঠের খড়ি কেনার সামর্থ নেই, তারাই গরুর গোবর সংগ্রহ করে পাটকাঠি দিয়ে গোবরের দইলিতৈরি করে নিজেদের জ্বালানির চাহিদা মিটিয়ে অন্যের কাছে বিক্রি করে থাকে।
রিমা নামের একজন মহিলা জানান, এক মণ খড়ি ২৫০-৩০০ টাকা, এক সিলিন্ডার গ্যাস এর দাম ১২০০-১৪০০ টাকা । তাই খড়ি, গ্যাস না কিনে গোবরের দইলির দিকে ঝুঁকেছে অনেকে। কারণ গোবরের দইলি একশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
উপজেলার খামারিরা জানান, পরিণত বয়সে একটি উন্নতজাতের গরু থেকে দিনে প্রায় ১০-২০ কেজি গোবর পাওয়া যায়। সেই হিসাবে এখানে প্রতিদিন অনেক গোবর মেলে। তবে এর সিংহভাগই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শহরের এক চা দোকানী বলেন,গ্যাসের খরচ বেড়েছে অনেক তাই আমি এখন জ্বালানি হিসেবে দইলি ও ঘুটে ব্যবহার করতেছি । গ্যাসে প্রতিদিন খরচ হতো প্রায় ২৫০ টাকা এখন খরচ হ”্ছে ৫০-৭০ টাকা । এতে আমি এখন লাভবান হচ্ছি। এনজিও কর্মী হাসান মাহমুদ জানান, অস্বচ্ছল পরিবারের পাশাপাশি গ্রামের অনেক স্বচ্ছল পরিবারও রয়েছেন, যারা গবাদি পশুপালন করে একদিকে জ্বালানি চাহিদা মেটাচ্ছেন, অন্যদিকে দইলি ও ঘুটে বিক্রি করে ঘোরাচ্ছেন ভাগ্যের চাকা। তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে শলার ব্যবহার গ্রামের দরিদ্র নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এখন জ্বালানি সংকট বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এই দইলি স্বল্প দামে কিনে রান্নার কাজে ব্যবহার করছেন। তাই এই এলাকার নারীরা গোবরের দইলি ও ঘুটে বিক্রি করে পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন এবং নিজেরাও ঘুড়ে দাঁড়িয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *