রাকিব হাসনাত ॥ ভাঁড়ারা ইউনিয়নের আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান মাহমুদের ঘোড়া মার্কা প্রতিকের বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চর বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাঁকজমকপূর্ণ জনসভা জনসমুদ্রে পরিনত হয়। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঘোড়া মার্কা) প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী সুলতান মাহমুদ। তিনি বলেন, ইয়াসিন আলমসহ ভাড়ারা ইউনিয়নের একেরপর এক হত্যাকান্ডের প্রতিশোধের জবাব নিতে তাদের এতিম সন্তানের মূখের দিকে তাকিয়ে আগামী ১৫ তারিখ ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার আহবান জানান তিনি। সেদিন ইয়াসিনকে তারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে ভাঁড়ারা ইউনিয়ন নিয়ে স্বজনহারা শতশত মানুষের যে স্বপ্ন রয়েছে প্রথমে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। নিরিহ মানুষ হত্যাকারীদের বিচার করা হবে। চর-টাটি পৃথক করে ইউনিয়ন গঠন করা হবে। চরের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে। সুলতান মাহমুদ বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান জনগণের ভোটে বারবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সবার সাথে প্রতারণা করে আসছে। জনগণের সাথে আলোচনা না করেই স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ইউনিয়নটাকে পরিচালনা করেছে। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ইউনিয়নের গ্রামীণ অঞ্চলের রাস্তাঘাট কালভার্ট ব্রিজ করেনি। নিজ লোকদের মাধ্যমে ইচ্ছামত কাজ পরিচালনা করে আসছে। নিজে ইউনিয়নে অবস্থান করেন না। তার সমর্থক ছাড়া কাউকে কার্ডসহ জন্মনিবন্ধন পর্যন্ত করে দেইনি। আমার একটি মেয়ে আছে তার জন্মনিবন্ধন না থাকায় সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে পারিনি। চেয়ারম্যান অন্যায়ভাবে আমার মেয়ে জন্মনিবন্ধন করে দেয়নি। একটি জন্মনিবন্ধন করতে ২৮ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। আমি চেয়ারম্যান হতে পারলে জন্মনিবন্ধন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে করে নিয়ে আসা হবে বলে জানান তিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বলেন, আগামী ১৫ জুন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে ইউনিয়নটাকে সন্ত্রাসীদের দখল থেকে মুক্ত করবে। ইউনিয়নের মানুষ একঘেয়েমি থেকে মুক্তি চায়। বিপুল ভোটে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ইউনিয়নটি অবহেলিত হয়ে আছে। অবহেলিত জানপদকে উন্নয়নের সুযোগ দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করুন। ইনশাআল্লাহ আমি বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করব।
পাবনার ৭৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে ভাড়ারা ইউনিয়ন সর্বোচ্চ মডেল হিসেবে গড়ে তুলার অঙ্গিকার করেন তিনি। অবহেলিত ভাড়ারা শাহী মসজিদকে বিশাল ইসলামী প্রশিক্ষণকেন্দ্রে রুপান্তর করা হবে। মুজিব বাধের দুই পাশ দিয়ে বৃক্ষোরোপন করা হবে। প্রতিটি গ্রামে শিক্ষা উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হবে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পাবনার বিশিষ্ট সমাজসেবক গোলাম মোস্তফা কফিল, ভাড়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ওহিদুর রহমান, ফিরোজ মাষ্টার, আওয়ামী লীগ নেতা হাজ্জাজ প্রামানিক, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মো.বাবু, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা বছির প্রামানিক, আব্দুল গনি খা, খালেক মেম্বর, খলিলুর রহমান, ফিরোজ মাষ্টার, আনিছুর রহমান,আবুল কালাম শামসুর রহমান। প্রসঙ্গত : গত বছরের ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার সময় পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের সঙ্গে সংঘর্ষে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান মাহমুদের সংঘর্ষে ইয়াসিন আলম (৩৫) কে প্রতিপক্ষের লোকজন হত্যা করে। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের সব পদের (চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য, সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য) নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরিশেষে গত ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন থেকে ১৫ জুন নির্বাচন করতে তফসিল ঘোষণা করেন।